পচনশীল পণ্য খালাস ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৮ আগস্ট, ২০২১ ৭:৪০ : অপরাহ্ণ 261 Views
বিভিন্ন শুল্ক জটিলতার কারণে দিনের পর দিন বন্দরে পচনশীল পণ্য খালাসের অপেক্ষায় পড়ে থাকে। এতে করে আমদানিকারক বা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এনবিআর এসব পণ্য শুল্কায়ন করে দ্রুত খালাসের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাসের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে কীভাবে এসব পণ্য শুল্কায়ন করতে হবে, সে বিষয়ে একটি বিধিমালা তৈরি করা হয়েছে।এ বিষয়ে মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে তা কার্যকর করতে দেশের সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষকে এনবিআর থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।এনবিআর বলছে, নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পচনশীল পণ্য খালাস করতে হবে।কোনগুলো পচনশীল পণ্য, তার তালিকাও প্রকাশ করেছে এনবিআর। বলা হয়েছে, ৬৩ ধরনের পণ্য পচনশীল হিসেবে গণ্য হবে এবং এগুলো সঙ্গে সঙ্গে শুল্কায়ন করা হবে।রাজস্ব বোর্ড বলেছে, এসব পণ্য বন্দরে আসার পর বিল অব এন্ট্রি বা বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল হলে যদি কায়িক পরীক্ষার জন্য বিবেচনা না করা হয় কিংবা শুল্ক গোয়েন্দা বা অন্য কোনো দপ্তরের কোনো আপত্তি না থাকে, তাহলে তা অবিলম্বে শুল্কায়নের ব্যবস্থা করে খালাসের ব্যবস্থা করতে হবে।এনবিআরের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, বিভিন্ন জটিলতার কারণে দিনের পর দিন বন্দরে পচনশীল পণ্য বিভিন্ন কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনে খালাসের অপেক্ষায় পড়ে থাকে।এতে করে একদিকে যেমন আমদানিকারক বা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, তেমনি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয় সরকার। এসব কারণে পচনশীল পণ্য শুল্কায়ন করে দ্রুত খালাসের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।মূলত ঢাকা চেম্বার, মেট্রো চেম্বারসহ দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির দাবির মুখে বিধিমালাটি জারি করেছে এনবিআর।এটি ‘পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাস ও নিষ্পত্তিকরণ বিধিমালা ২০২১’ নামে পরিচিত।পচনশীল পণ্যের তালিকায় উল্লেখযোগ্য পণ্যগুলো হলো জীবন্ত পশু, পাখি ও প্রাণী; জীবন্ত হাঁস-মুরগি, টার্কি ও এদের বাচ্চা; জীবন্ত ও হিমায়িত মাছ, মাছের পোনা; ইস্ট; জীবিত গাছপালা ও চারা, মাশরুম; তাজা ফুল, তাজা ফল, তাজা ক্যাপসিকাম, কাঁচা রাবার, কুল বা বরই, খেজুর, তামাক (প্রক্রিয়াজাত নয়), তেলবীজ, আলুবীজসহ সব ধরনের বীজ; খাদ্যশস্য ও শস্য, ডাল, ছোলা; চিনি, বিট লবণ, সাধারণ লবণ ও টেস্টিং সল্ট; দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, হিমায়িত ও প্রক্রিয়াজাত মাংস, হাঁস-মুরগির ডিম, চকলেট, বিস্কুট, সেমাই, চিপস, নুডলস, চানাচুর, আচার, শুঁটকি মাছ, চা-পাতা, কফি, সুপারি, নারকেল, ঘি, বাটার অয়েল, গুড়, বাদাম, সার, কাঁচা চামড়া, পান, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল, রসুন, মরিচ, আদা, কাঁচা হলুদ, তাজা ও হিমায়িত শাকসবজি, তেঁতুল, তালমিছরি, সয়াবেরি ডি, কিশমিশ, অনধিক ছয় মাস মেয়াদযুক্ত সব খাদ্যদ্রব্য; প্রসাধনসামগ্রী; ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল।

বিধিমালায় যা বলা আছে

পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাস করতে প্রতিটি কাস্টমস হাউস আলাদা করে অনধিক পাঁচ সদস্যের একটি গ্রুপ গঠন করবে। এই কর্মকর্তারা পচনশীল পণ্য খালাস-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। তারা চাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউসের কমিশনারের অনুমতিক্রমে নির্ধারিত অফিস টাইমের বাইরে গিয়েও পণ্য খালাস করতে পারবেন।এ ছাড়া এই পণ্য চালান সম্পর্কে কোনো বিশেষ সংবাদ বা আমদানিনিষিদ্ধ বা মিথ্যা ঘোষণা না থাকলে, সর্বোপরি সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী ঠিক থাকলে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পচনশীল পণ্যের শুল্কায়ন-প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।পচনশীল পণ্যের চালান দ্রুত খালাস করার বিষয়ে বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো আমদানিকারক বা রপ্তানিকারক চাইলে কোনো সিস্টেমে ২৪ ঘণ্টাই বিল অব অ্যান্ট্রি দাখিল করতে পারবেন।কোনো আমদানিকারক যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য খালাস না করেন, সে ক্ষেত্রে একজন উপকমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তা নিলাম বা ধ্বংস করার বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!