সমৃদ্ধির পথে রয়েছে দেশের সেবা খাতে রফতানি আয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশের সেবা খাতে রফতানি আয় এসেছে ২৮৭ কোটি ১৩ লাখ ডলার; যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। বুধবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহকৃত পরিসংখ্যান থেকে মোট তিনটি ভাগে সেবা খাতে রফতানি আয়ের সংকলন করা হয়েছে। এ তিনটি ভাগ হলো— গুডস প্রকিউরড ইন পোর্টস বাই ক্যারিয়ারস, গুডস সোল্ড আন্ডার মার্চেন্টিং ও সার্ভিসেস।
ইপিবির তথ্য মতে, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এ তিনটি ভাগ থেকে মোট রফতানি আয় হয়েছে ২৮৭ কোটি ১৩ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল ১৯০ কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সেবায় রফতানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের বিভিন্ন ধরণের সেবা রফতানি খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫০ কোটি ডলার ।
রফতানির এ আয়ের মধ্যে সরাসরি সেবা খাত থেকে এসেছে ২৮০ কোটি ৮৮ লাখ। বাকিটা দেশের বন্দরগুলোতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোর কেনা পণ্য ও সেবা এবং মার্চেন্টিংয়ের অধীনে পণ্য বিক্রির আয়।
বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া সেবাপণ্যের মধ্যে রয়েছে ম্যানুফ্যাকচারিং সার্ভিসেস অন ফিজিকাল ইনপুটস, মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড রিপেয়ার, ট্রান্সপোর্টেশন, কন্সট্রাকশন সার্ভিসেস, ইনস্যুরেন্স সার্ভিসেস, ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, চার্জেস ফর দ্য ইউজ অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি, টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসেস, আদার বিজনেস সার্ভিসেস, পার্সোনাল-কালচার-রিক্রিয়েশনাল ও গভর্নমেন্ট গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সার্বিকভাবে বিশ্ববাজারে পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশের আয় করেছে ২ হাজার ৪১৭ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৪২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। এ হিসাবে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে প্রথম ছয় মাসে পণ্য ও সেবা খাত মিলে মোট রফতানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৭০৫ কোটি ৮ লাখ ডলার; যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পণ্য ও সেবা খাতে রফতানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে একই সময় রফতানি আয় হয়েছিল ২ হাজার ৩২৩ কোটি ২৯ লাখ ডলার।
সেবা খাতগুলোর দিকে সরকারের বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার ফলে এর মান বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে রফতানি আয়ে, এমনটাই মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছর শেষে প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি রফতানি আয় হবে বলে আশা করছেন তারা।