সংসদে প্রকাশ করা দেশের শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় এম এ আজিজের রিমেক্স ফুটওয়্যার রয়েছে তৃতীয় স্থানে।খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করায় রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজের সম্পত্তি নিলামে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেড। এই আব্দুল আজিজই জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার বলে দাবি করছে জনতা ব্যাংক। তবে ব্যাংকের এই দাবি অস্বীকার করেছেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার।
এদিকে ৩০ সেপ্টেম্বর রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ঋণের অর্থ আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংকটি। ভুয়া রফতানি নথি তৈরি করে জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড। এর আগে ৩১ জুলাই জনতা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম এ আজিজের নামে একটি চিঠি ইস্যু করে।
জনতা ব্যাংক বলছে, রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস লিটুল জাহান মিয়া। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানটির কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ১ হাজার ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৯ টাকা।
জনতা ব্যাংক জানায়, রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড কেউ কিনতে চাইলে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অথবা দিলকুশা লোকাল অফিসে দরপত্র জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে যে ১০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন, সেখানে শীর্ষ দশের মধ্যে রয়েছে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী দুই প্রতিষ্ঠান রিমেক্স ফুটওয়্যার ও ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড। এর কর্ণধার দুই ভাই এম এ আজিজ ও এম এ কাদের। ঋণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে তারা বের করে নিয়েছেন প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এ দুই ভাই এখন জনতা ব্যাংকেরও শীর্ষ ঋণখেলাপি।
সংসদে প্রকাশ করা দেশের শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় এম এ আজিজের রিমেক্স ফুটওয়্যার রয়েছে তৃতীয় স্থানে। শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড রয়েছে দশম স্থানে। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এ আজিজের বড় ভাই এম এ কাদের।
এ প্রসঙ্গে আবুল আজিজ বলেন, ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের তার ভাই। তবে তিনি জনতা ব্যাংক থেকে কোনও টাকা নেননি। রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সঙ্গেও তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।
জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুছ ছালাম আজাদ বলছেন, ‘রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজকে আমরা এম এ কাদেরের ভাই বলেই জানি। যিনি সিনেমা তৈরি করেন।’
জানা যায়, ২০১৩ সাল-পরবর্তী পাঁচ বছরেই জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন এম এ কাদের ও এম এ আজিজ। এরমধ্যে পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা তহবিল থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। দুই ভাইকে দেওয়া জনতা ব্যাংকের এ ঋণের বড় অংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে অন্যতম আলোচিত নাম জাজ মাল্টিমিডিয়া। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।