সুদিনের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন আর দারিদ্র্যতার দুষ্টচক্রের বেড়াজালে বন্দী নয়। বর্তমান সরকার যুগোপযোগী অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞের বদৌলতে দারিদ্র্য বিমোচনের ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে সরকার।বাংলাদেশকে এখন দারিদ্র্য বিমোচনের মডেল বলে আখ্যায়িত করছে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো বড় আন্তর্জাতিক সংস্থা। কারণ সারাবিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই দারিদ্র্য কমে যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৬ দশমিক সাত শতাংশ। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অনুযায়ী ওই হার ২০১৫ সালের মধ্যে অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশ তিন বছর আগেই বর্তমান সরকারের একাগ্র প্রচেষ্টায় ২০১২ সালেই এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য সম্পূর্ণরূপে বিদায় করতে চায় বাংলাদেশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানত দুটি কারণে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। এর একটি হলো শ্রমের মজুরি বৃদ্ধি। অন্যটি জনসংখ্যার প্রকৃতিতে পরিবর্তন। মোট জনসংখ্যায় কর্মক্ষম লোকের অংশ বেড়ে যাওয়ায় মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্যের দাম কম থাকা দারিদ্র্য হ্রাসের অন্যতম কারণ।
এছাড়া বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে কৃষি। সরকারের কৃষি-সহায়ক নীতির কারণে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামারের মতো প্রকল্পের কারণে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করতে পারছে গ্রামের মানুষ। দীর্ঘ সময় নিয়ে বিনিয়োগ ঋণ পরিশোধ করার সময় পেয়েছে তারা। যা দীর্ঘ সময়ে পরিশোধ করার সুযোগও পাচ্ছে তারা।
একদিকে এদেশে কমছে দারিদ্র্যের হার অন্যদিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। এর ফলে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবন মান। দেশের মানুষের গড় আয় বাড়ছে দ্রুত গতিতে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্যমতে, প্রতি বছর মানুষের গড় আয় বাড়ছে ১০০ ডলারেরও বেশি। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ আয় দাঁড়িয়েছে ১৭৫২ মার্কিন ডলারে। গত ছয় বছরে আয় বেড়েছে ৬৯৮ ডলার। প্রতি বছর আয় বেড়েছে ১১৬ মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের শেষদিকে এই আয় দুই হাজার মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে মনে করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। গড় আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের জীবন মানও বদলে যাচ্ছে। এতে মানুষের গড় আয়ুও বাড়ছে। দারিদ্রের হার কমছে। ফলে মানুষের ধীরে ধীরে উন্নত জীবন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে।