সমসাময়িক সময়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। বর্তমান সরকারের অর্থনীতিবান্ধব পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নের ফলে সমৃদ্ধ অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকায় ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে ৪১তম অবস্থানে রেখেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিইবিআর। ২০১৮ সালে এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪৩তম। লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর)-এর সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি দেশগুলো যথাক্রমে জাপান, জার্মানি ও ভারত।
এশিয়ার অনেক দেশের মতোই আগামী ১৫ বছরে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে এবং জিডিপি-জিএনপি উল্লেখ্যযোগ্য হারে বাড়বে। সিইবিআর প্রতিবেদনের ১০ম সংস্করণে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করছি ২০১৮ থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বার্ষিক গড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে। এতে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের ১৯ ধাপ উন্নতি হবে এবং ২০৩৩ সালে দেশটি ২৪তম অবস্থানে উঠে আসবে। বাংলাদেশ তার পোশাক রফতানি, ক্রমবর্ধমান প্রবাসী আয়, ভারতের বাজারে শুল্কমুক্ত পণ্য রফতানি সুবিধা, অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় ও সরকারি ব্যয় থেকে উপকৃত হচ্ছে। প্রায় ৪৩ শতাংশ বাংলাদেশি কৃষিখাতে কাজ করে, যাদের বেশিরভাগই ধান ও পাট উৎপাদন করে। তবে ভুট্টা, সবজি ও গম উৎপাদনও বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান আমদানি চাহিদার কারণে দেশটির রফতানি সাফল্য ম্লান হতে পারে বলে প্রতিবেদনে সতর্কও করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অর্থ যোগাতে সরকারের আয় বাড়ানোর পথ খুঁজে বের করার প্রয়োজন পড়বে’। এছাড়াও উল্লেখিত সময়ে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় লড়তে হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন চোখে পড়ার মত। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৬০ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ছিল। বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উন্নয়নের ফলে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪৩ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজার সৃষ্টি করতে সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। প্রবাসীদের মাধ্যমে অর্জিত রেমিট্যান্সও গুরুত্ববহ ভূমিকা পালন করেছে।
এদিকে ২০৩৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ অর্থনীতির মধ্যে তিনটি দেশই হবে এশিয়ার। আর এই তিন দেশের মধ্যে চীন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। এছাড়া শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে ভারত তিনে ও জাপান চারে অবস্থান করবে বলে প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে।