অর্থ পাচার ঠেকাতে মরিয়া সরকার


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় :৪ অক্টোবর, ২০২২ ৮:৪৪ : অপরাহ্ণ 242 Views
অর্থ পাচার ঠেকাতে মরিয়া সরকার। মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুরু হচ্ছে সম্মিলিত সাঁড়াশি অভিযান। অভিযানের প্রথম টার্গেট অনলাইন জুয়া। কারণ অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। আর অনলাইন জুয়ার টাকার লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। এজন্য দ্বিতীয় টার্গেট অনলাইন ব্যাংকিং। প্রথমেই অনলাইন জুয়ার অ্যাপসগুলোকে শনাক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অ্যাপস পরিচালনকারীদের গ্রেপ্তারে শুরু হচ্ছে সম্মিলিত অভিযান।
রোববার রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি সদর দপ্তরে অর্থ পাচার ঠেকাতে পুলিশসহ অন্য সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের মূল এজেন্ডা ছিল অর্থ পাচার প্রতিরোধ।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে প্রকাশিত তথ্য মোতাবেক দেশ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পাচার হয় অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে। জুয়ার টাকাগুলো অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রথমেই অনলাইন জুয়ার অ্যাপসগুলোকে শনাক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত অনলাইন ব্যাংকিংয়ের তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। প্রয়োজনে যেসব ব্যাংক অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়, ওইসব ব্যাংকের তালিকা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অর্থ পাচার ঠেকাতে প্রথমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), অর্থ পাচার নিয়ে কাজ করার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, সিআইডির মানি লন্ডারিং টিম, দুদকসহ সংশ্লিষ্টরা কৌশলপত্র ঠিক করবেন। এরপরই শুরু হবে মানি লন্ডারিংয়ের পুরো বিষয়ের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া। অপরাধীদের শনাক্ত, ছবিসহ হালনাগাদ তালিকা তৈরি, ডিজিটাল সাক্ষ্য সংগ্রহ ও মামলার তদন্ত চলমান থাকবে। পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা তৈরিসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

 

বৈঠকে পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুলস্নাহ আল মামুন উপস্থিত থেকে অর্থ পাচার ঠেকাতে সম্মিলিত কৌশলপত্র নির্ধারণ, পাচারকারীদের তালিকা, তাদের গ্রেপ্তার, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার ঠেকাতে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অনলাইন জুয়ার অ্যাপ শনাক্ত করার পাশাপাশি সাইট পরিচালনাকারীদের গ্রেপ্তারে

\হকড়া নির্দেশ দেন। অর্থ পাচার ঠেকাতে সম্মিলিত অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এমন প্রক্রিয়ার মধ্যে কারও গাফিলতি থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অর্থ পাচার ঠেকাতে সরকার মরিয়া। যেভাবেই হোক অর্থ পাচার ঠেকাতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

 

 

সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, সিআইডি অর্থ পাচার ঠেকাতে যুদ্ধে নামছে। অর্থ পাচারে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। বিদেশে পালিয়ে থাকাদেরও দেশে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে বিটিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাইবার মনিটরিং বিভাগগুলো অনলাইন জুয়ার অ্যাপস ও যেসব অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়, তার তালিকা তৈরির কাজ করছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে সাঁড়াশি অভিযান আরও বাড়ানো হবে।

 

 

এসবি প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশবাসী ডিজিটাল সেবার সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এই ডিজিটাল পস্নাটফর্মকে ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধ করছে। এই অপরাধগুলো কঠোরভাবে দমন করা হবে।

সূত্রটি বলছে, বৈঠকে অর্থ পাচারের নানা দিক তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষক ডক্টর খান সরফরাজ আলী, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান আইনজীবী খুরশিদ আলম খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. হাসান শাহরিয়ার ফাহিম ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক রেজাউর রহমান।

অন্যদের মধ্যে সিআইডির সাইবার বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী হাসান, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ ফাহিম, বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রেজাউল মাসুদ অর্থ পাচার সংক্রান্ত নানা দিক তুলে ধরেন।বৈঠকে যুক্তরাজ্য থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার এক্সেস বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডক্টর মামুনুর রশিদ ও মার্কিন যুক্তরাষ্টের সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ কাজী জামান।

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!