বান্দরবান অফিসঃ-রোকেয়ার আস্তানার টপ কলগার্ল ছিল তানিয়া ওরফে তান্নি।খদ্দেররা তার কাছে হুমড়ি খেয়ে পড়তো।তানিয়ার স্বামী মামুন বার বার চাইছিল তানিয়াকে সুপথে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু পারছিল না।তানিয়া বন্দি ছিল রোকেয়ার অপরাধ সাম্রাজ্যে।স্বামীর অমতেই রোকেয়া কখনো কখনো একাধিক পুরুষের বিছানায় এক সঙ্গে ঠেলে দিতো তানিয়াকে।মাসখানেক আগে তেমনিভাবে সিলেটের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ৫ ছাত্রের কাছে তানিয়াকে তুলে দিয়েছিল রোকেয়া। টানা ৫ দিন ওই যুবকরা তানিয়াকে নিয়ে আমোদ-ফুর্তি করে।কখনো কখনো হাই-প্রোফাইল খদ্দেরদের গ্রাসে ঠেলে দেয়া হতো তানিয়াকে।রোকেয়ার কাছে বন্দি থাকা তানিয়া বাধ্য হয়েই এসব যুবকের সঙ্গে মেলামেশায় বাধ্য হতো।তানিয়ার বিবস্ত্র ছবি এমনকি ভিডিও ফুটেজ নিজের কাছে রেখে দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেছে রোকেয়া।আর রোকেয়ার প্রতি এমন জেদ থেকে লাশ উদ্ধারের দুইদিন আগে ৩০শে মার্চ রাতে তানিয়া ও তার স্বামী ইউসুফ মামুন খুন করে রোকেয়াকে।গ্রেপ্তারের পর সিলেটের পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ের কাছে এমন তথ্য জানিয়েছে তানিয়া ও মামুন।পরবর্তীতে সোমবার রাত ১০টার দিকে তারা সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমারের আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।গতকাল খুনের ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিং করেন পিবিআই সিলেটের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মল্লিক।আইজিপি’র নির্দেশে তিনি ছায়া তদন্তের মাধ্যমে সিলেটের আলোচিত এ জোড়া খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছেন।পিবিআই সূত্র জানিয়েছে,মিরাবাজারের খারপাড়ার ওই বাসায় রোকেয়ার নির্দেশেই তার ছেলে নিহত রবিউল ইসলাম রূপমের সঙ্গে বিছানায় সঙ্গী হয় তানিয়া। একদিন নয়,একাধিক দিন রূপম তাকে তার অমতে ধর্ষণ করেছে।আর ঘটনার দিন রাত ১০টা পর্যন্ত রোকেয়ার বাসাতে অবস্থান করেছে প্রেমিক নাজমুল।নাজমুলের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক তানিয়ার।নাজমুলও তানিয়াকে ব্যবহার করেছে।নিহত রোকেয়ার সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ ছিল ভিন্ন। রোকেয়া নাজমুলকে ভালোবাসতো।তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতো।এমনকি রোকেয়ার সন্তানরা নাজমুলকে ‘আব্বু’ বলে ডাকতো।খুনের ঘটনার সঙ্গে নাজমুলের সম্পৃক্ততা না পেলেও কোতোয়ালি পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে নাজমুলও ছিল খুনের পরিকল্পনায় জড়িত।দুটি কারণ এক হওয়ার পর ফিল্মি স্টাইলে পরিকল্পনা করেই খুন করা হয় রোকেয়া ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম রূপমকে। তানিয়া ও তার স্বামী মামুনের জেদ ছিল রোকেয়ার প্রতি।আবার নাজমুলের জেদ ছিল রোকেয়া তার লন্ডনি বধূর বিয়েতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে দুইপক্ষ এক হয়ে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।তবে তানিয়া ও তার স্বামী মামুন কৌশলে নাজমুলের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।নাজমুল নিহত রোকেয়ার ইয়াবা ব্যবসার বড় বিনিয়োগকারী ছিল। কয়েক লাখ টাকা নাজমুল রোকেয়াকে দিয়েছে ইয়াবা ব্যবসার জন্য।আবার তানিয়ার দেহ ব্যবসা ও ইয়াবা বিক্রির বেশিরভাগ টাকাই কেড়ে নিতো রোকেয়া।পিবিআই জানায়,খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩০শে মার্চ মধ্যরাতে।ওই দিন রাতে তানিয়া ও তার স্বামী মামুন চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় রোকেয়া ও তার সন্তানদের।রাত ১০টার দিকে নাজমুল রোকেয়ার বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এর আগে একই কক্ষে ভেতর থেকে সিটকানি বন্ধ করে অবস্থান করে রোকেয়া ও নাজমুল।তারা প্রায় ঘণ্টাখানেক এক সঙ্গে ছিল।নাজমুল বের হওয়ার আগেই তাদের চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়।১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে রোকেয়া ও তার সন্তানরা গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে পড়ে।এরপর প্রথমে রোকেয়ার ওপর তারা হামলে পড়ে। রোকেয়ার মাথা ও হাত ধরে রাখে তানিয়া।আর মামুন তাকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে।এ সময় রোকেয়ার সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়েছিল।কিন্তু মামুন চাকু দিয়ে উপর্যুপরি কোপানোর কারণে রোকেয়া এক সময় নিস্তেজ হয়ে পড়ে।এরপর তারা যায় রবিউল ইসলাম রূপমের রুমে।সেখানে প্রথমে তারা রূপমকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।মৃত্যু নিশ্চিত হতে মামুন রোকেয়ার ছেলে রূপমের দেহেও চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়।এক সময় রূপমও নিস্তেজ হয়ে পড়ে।রোকেয়ার পাশেই ঘুমিয়ে ছিল শিশু রাইসা।মামুন রাইসাকেও খুন করতে তার গলায় টিপ দিয়ে ধরে।গলায় টিপ দেয়ার পরপরই রাইসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে।তাকে মৃত ভেবে তারা ছেড়ে দেয়।গভীর রাতে দরোজা ভেতর থেকে লক করে দিয়ে মামুন ও তানিয়া নিহত রোকেয়ার বাসা থেকে বের হয়ে যায়।পরে তারা অবস্থান নেয় নগরীর তোপখানাস্থ ভাড়াটিয়া বাসায়।সেখান থেকে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। শনিবার সিলেট থেকে পালিয়ে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ঘুষকান্দি গ্রামে পালিয়ে যায় তানিয়া আক্তার তান্নি।আর মামুন থেকে যায় সিলেটে। পরবর্তীতে মামুনকে চিহ্নিত করার পর তানিয়াকে কুমিল্লার পিতা বেলাল হোসেনের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.