সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক, ইমো, হোয়াটস অ্যাপ) নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির দুই ছাত্রীর প্রেমের ফাঁদে পড়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলার অনেক মধ্যপাচ্য প্রবাসী সর্বস্বান্ত হয়েছেন।
একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুই ছাত্রী ও তাদের সহযোগী এক বিকাশ এজেন্টকে আটক করে নোয়াখালী জেলা সিআইডি পুলিশ।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কুয়েত প্রবাসী সাইফুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে জেলা সিআইডি পুলিশ কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পরে ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সুধারাম থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতাররা হলেন, বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খাঁনপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে মারজাহান আক্তার (১৯), সেনবাগ উপজেলার কেশার পাড় ইউনিয়নের লেদুয়া গ্রামের গোলাম মাওলার মেয়ে শাহজাদী মজুমদার (২০), নোয়াখালী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের জয়কৃঞ্চপুর গ্রামের হোসেন আহমেদের ছেলে বিকাশ এজেন্ট দোকানদার মোশারফ হোসেন মনু।
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর তাদের ব্যবহৃত বিকাশ একাউন্টে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
সিআইডি সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কুয়েত প্রবাসী সাইফুল ইসলামকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কয়েক দফায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই দুই তরুণী।
এছাড়া কোম্পানীগঞ্জের মধ্যপাচ্য প্রবাসী তানভীর হোসেন, মোস্তফা চৌধুরী নামে দুই প্রবাসী যুবকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই দুই নারী। এছাড়াও কোম্পানীগঞ্জের বেশ কয়েকজন যুবক তাদের প্রেমের জালে ফেঁসেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে।
নোয়াাখালী জেলা সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহ আলম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, অভিযোগ রয়েছে নোয়াখালীতে এই চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, ইমো, হোয়াটস অ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারে ইউরোপ প্রবাসীর কন্যা সেজে মধ্যপাচ্য প্রবাসী যুবকদের বিয়ে করে ইউরোপে নেওয়ার লোভ দেখায়। এরপর তারা প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন, এছাড়াও চক্রটি ভুক্তভোগীদের সাথে অনলাইনে যৌনতার সম্পর্ক স্থাপন করে, আন্তরিক সময়ের ছবি ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আবার গরীব অসহায় লোক সেজে ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য ব্যাধির কথা বলে সাহায্য নেয়ার নামেও তারা অর্থ হাতিয়ে নিত। এসব অপকর্মের জন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক আইডি ব্যবহার করতো। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা আইডি গুলো পুরোপুরি নষ্ট করে দিত।
ভুক্তভোগী বাহরান প্রবাসী কবির হোসেন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, অসুস্থ গরীব লোকদের সাহায্যের কথা বলে তারা আমার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ইমোতে আমাকে ব্ল্যাক মেইল করে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে।