বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বহুল আলোচিত আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল্লার এর বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি পাড়ার চাক ও মারমা সম্প্রদায় ভুক্ত আদিবাসীরা।
বৃহস্পতিবার (৫ডিসেম্বর) বিকেলে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অনতিবিলম্বে পর্যটনের নামে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে সরকারী অর্থ অপচয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান এই আদিবাসীরা।
মাবনবন্ধনে বক্তারা বলেন,নাইক্ষ্যংছড়ির ২৭০, ২৭২ ও ২৬৯নং সোনাইছড়ি মৌজায় ১১টি পাড়ার চাক এবং মারমা’রা জুমচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।কিন্তু হঠাৎ করে শফিউল্লাহ পর্যটনের নামে জুম চাষের শতাধিক একর ভূমি জমি জবর দখল করে সেখানে জেলা পরিষদের অর্থায়নে জনশূণ্য এলাকায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা অপচয় করেছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, থোয়াইগ্যা চাক, ওয়াই মং চাক, অলকা তঞ্চগ্যা, মমে মারমা প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করেন চাক ও মারমা সম্প্রদায়ের নেতারা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, চাক ও মারমাদের জীবনের একমাত্র সম্বল ওই ভূমি।কিন্তু স্থানীয়দের সাথে কোনো প্রকার আলোচনা বা বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পর্যটনের নামে জুম ভূমির শতাধিক একর ভূমি জবর দখল করেছেন।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়,দখল হওয়া জমিতে বান্দরবান জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৮-২০২০ অর্থ বছরে ইতোমধ্যেই ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় সোনাইছড়িতে ৪০ মিটার বাঁধ টু ভ্যান বক্স কালভার্ট নির্মাণের নামে অর্থ লোপাট করা হয়েছে।ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাঙ্গু ওয়ে’র নামে দুটি প্রকল্প খোদ চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ বাস্তবায়ন করছেন বলে দাবী করা হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন,পর্যটন কেন্দ্র হলে এলাকায় উন্নয়ন হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।তবে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর ভূমি জবর দখল করে পর্যটন করার পক্ষে আমরা কেউ নই।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শফিউল্লাহ বলেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সরকারী খাস জায়গায় পর্যটনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।পর্যটন হলে ওই এলাকায় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে,এখানে ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ নেই।
প্রসঙ্গত,২০১৪ সালের গত ২৩ নভেম্বর দুপুরে চট্টগ্রামের জিইসি এলাকায় হোটেল লর্ডজ ইন- এ গোপন বৈঠককালে আরএসও‘র একাংশের সহ-সভাপতি,নাইক্ষ্যংছড়ি আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শফিউল্লাহ ও কক্সবাজারের মৌলবী ছালামতউল্লাহ,উখিয়ার সৌদি প্রবাসী আব্দুল মজিদ ও পাকিস্তানিসহ ৫জনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কক্সবাজার ও নাইক্ষ্যংছড়িতে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের ঘাঁটি ও জঙ্গি কানেকশনের অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।