বান্দরবানের স্বর্ণ জাদী ও রাম জাদীর প্রতিষ্ঠাতা উচহ্লা ভান্তের মৃত্যু রহস্য নিয়ে একের পর গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ক্ষান্ত হয়নি শিষ্যরা। এবার মিয়ানমার থেকে উচহ্লা ভান্তের প্রধান শিষ্যকে এনে জেলার ঐতিহ্যবাহী খিয়ংওয়া কিয়ং বসানোর চক্রান্ত শুরু করেছে ভান্তের শিষ্যরা। আর এনিয়ে জেলায় চলছে তোলপাড়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর অংশ হিসাবে উচহ্লা ভান্তের শিষ্যরা একটি গোপন বৈঠক করে। জেলা শহরের ভান্তের অন্যতম শিষ্য থোয়া চ প্রæ মাষ্টার, বাংলাদেশ ব্যাংক এর কর্মকর্তা মং ক্যশৈনু নেভী সোমবার বিকালে ( ৪ মে) রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ক্যাংয়ে এই গোপন বৈঠক করেন। এসময় বাঙ্গাল হালিয়া আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ভদন্ত ক্ষ্যামা থারা মহাথেরসহ কয়েকজন ভান্তে উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা মিয়ানমার থেকে উচহ্লা ভান্তের প্রধান শিষ্যকে নিয়ে এসে বান্দরবানের খিয়ংওয়া কিয়ংসহ স্বর্ণজাদী, রামজাদীসহ বিভিন্ন জাদীতে তাদের কৃতিত্ব প্রতিষ্ঠা করে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।
আরো জানা গেছে, এই ব্যাপারে বান্দরবান শহরের ঐতিহ্যবাহী খিয়ংওয়া কিয়ং সবাইকে, বৌদ্ধ ভিক্ষু পরিষদ ও জেলার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সিনিয়র নেতাদের না জানিয়ে অত্যান্ত গোপনীয়তা অবলম্বন করে আলোচিত এই গোপন মিটিং এর আয়োজন করে ভান্তের শিষ্যরা।তবে বৈঠকের বিষয়টিতে ব্যাপক গোপনীয়তা অবলম্বন করলেও এই বৈঠকের সংবাদ চলে আসে স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও সংবাদকর্মীদের কাছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসের কারনে বান্দরবান জেলায় লকডাউনের মধ্যে এই গোপন বৈঠকের আয়োজনে ব্যাপক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে একটি বিহারে ভান্তেদের নিয়ে এই ধরণের গণ জামায়েত করা, করোনা সংক্রামনের আশংখাকে বাড়িয়ে দেয়।
স্থানীয় উখ্যানু মার্মা বলেন, ভান্তের মৃত্যু রহস্য নিয়ে শিষ্যরা যা করছে তা কখনো কাম্য নয়, বিহার নিয়ে এখন যা করছে সেটিও কোন ভাবে মানা যায়না।
অন্যদিকে জেলায় বিহারের নেতৃত্ব বৌদ্ধ ভিক্ষু পরিষদ নির্ধারণের নিয়ম থাকলে তার এই নিয়ম অমান্য করে মিয়ানমার থেকে ভিক্ষু এনে নেতৃত্বে বসানোর বিষয়টিকে গভীর ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখছে। বৈঠকের বিষয়টি ক্ষোদ সেখানের পাড়াবাসী, বৌদ্ধ সমাজ, এমনকি বৌদ্ধ ভিক্ষু পরিষদ জানেনা। ফলে আগামীতে বিহারের নেতৃত্ব নিয়ে বিশৃংখল ও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয়দের অনেকে।
এই ব্যাপারে সার্ক হিউম্যান রাইটার্স ফাউন্ডেশন সাধারণ সম্পাদক অং চ মং বলেন, গুরু ভান্তে যখন জীবিত ছিলো তখন উনার হাতে গড়া বিহারগুলো সু-শৃংখল ভাবে পরিচালনা করেছিলেন। এখন এগুলো পরিচালনার জন্য কি চিন্তা করছে আমার জানা নেই। তিনি আরো বলেন, আমি লোকে মুখে শুনেছি, ভান্তের একজন প্রথম শিষ্য মিয়ানমারে আছে, উনি দেশে ফিরে আসলে হয়তো উনার মাধ্যমে এগুলো পরিচালিত হতে পারে। আমি মনে করি, এগুলো পরিচালনার জন্য শক্ত কমিটি দরকার।
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল শারিরীক অসুস্থতা নিয়ে উ পঞ্ঞা জোত মহাথেরোকে বান্দরবান থেকে নিয়ে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে বান্দরবানের সিভিল সার্জন দাবী করলেও তার শিষ্যরা দাবি করেন, তিনি ১৩ এপ্রিল সকালে মারা যান। এরপর অনেকটা গোপনে তার মরদেহ বান্দরবান না এনে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার খৈয়াখালি বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.