সিএইচটি নিউজ ডেস্কঃ-কক্সবাজার জেলার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ থেকে সম্প্রতি বড় বড় ইয়াবার চালান পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে পাচারকারী ও ব্যবসায়ীরা। তাই আটকবিহীন এই উদ্ধার অভিযানের সফলতা ম্লান হচ্ছে।অন্যদিকে কোনোভাবেই কমছে না ইয়াবা পাচার। বরং দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ইয়াবার আদান-প্রদান।আগে টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ী থাকলেও সেবনকারী তেমন ছিল না। বর্তমানে সেবনকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। যে কারণে এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।তারা জানান,এইভাবে চালান আসতে থাকলে নতুন প্রজন্মকে ইয়াবার ছোবল থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার।সহজেই দুই দেশের লোকজন সীমান্ত পারাপার করে থাকে। কেউ যায় বৈধভাবে।আবার কেউ অবৈধভাবে।এই সুযোগে শুরু হয় ইয়াবার আদান-প্রদান।শুরুর দিকে ইয়াবা ব্যবসা সম্পর্কে অনেকেই অবগত ছিল না। প্রায় বছর দশেক আগে এই ব্যবসার সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ে।টেকনাফের গ্রামে গ্রামে এখন ইয়াবা ব্যবসায়ী।কদিন আগেও যারা কাঠুরিয়া,রিকশাচালক,বাসচালক,দিনমজুর ও জেলে ছিল তারাও এখন ইয়াবার ব্যবসা করে কোটিপতি বনে গেছেন।তাদের রয়েছে আলিশান বাড়ি,গাড়ি,ব্যাংক ব্যালেন্স ও বিপুল পরিমাণ ধন-সম্পদ।আবার অনেকে ইয়াবার বদৌলতে জনপ্রতিনিধিও হয়ে যাচ্ছেন।তাদের প্রতিজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে।ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে রয়েছে। তবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এ তালিকার কোনো বাস্তবায়ন নেই।এই কারণে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা উৎসাহ বোধ করছে।আবার অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলায় তাদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না।এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রতি মাসে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নিচ্ছেন।রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার কারণে ইয়াবা পাচার কমে যাবে বলে ধারণা করেছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু সম্প্রতি পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বড় বড় ইয়াবার চালান উদ্ধার করায় তাদের এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।সম্প্রতি সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের বিভিন্ন জায়গা থেকে কোস্টগার্ড,বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব বড় বড় ইয়াবার চালান উদ্ধার করে চলছে। তাদের এ মালিকবিহীন পরিত্যক্ত ইয়াবা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে এলাকায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সচেতন মহলের কাছে এ উদ্ধার অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।এ বিষয়ে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিত কুমার বড়ুয়া আরটিভি অনলাইনকে বলেন,আমি যোগদান করার পর ১৬ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে টেকনাফ থানা পুলিশ।এ উদ্ধারের সঙ্গে আটক করা হয় ৪ জন পাচারকারীকে।কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লে.ফয়েজুল ইসলাম মণ্ডল আরটিভি অনলাইনকে জানান,জানুয়ারি থেকে ১২ মে পর্যন্ত প্রায় ৮২ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।এসব ইয়াবার অপারেশন বেশির ভাগই হয়েছে নৌপথে। সমুদ্র পথে ইয়াবার বড় বড় চালান চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে পাচারের সময় এসব ইয়াবা আটক করা হয়।তিনি আরও জানান,সর্বশেষ ৮ মে ভোররাতে সেন্টমার্টিনের পশ্চিম সাগরে সন্দেহজনক একটি কাঠের বোটকে কোস্টগার্ড টহল দল থামার সংকেত দেয়।কিন্তু বোটটি না থামিয়ে দশটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়ানো বস্তা পানিতে ফেলে পালিয়ে যায় পাচারকারীরা। পরবর্তীতে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়ানো বস্তাগুলো তল্লাশি করে ১৪ লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করা হয়।২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর মনজুর আরটিভি অনলাইনকে জানান,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসব ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।পাচারকারীরা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে অনেক সময় পালিয়ে যায়।এতে পরবর্তী তদন্ত করার সুযোগ বিজিবির থাকে না।পরিত্যক্ত ইয়াবাগুলি ব্যাটালিয়নে জমা রেখে পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়।এদিকে র্যাবের অভিযান আলাদাভাবে হয়ে থাকে।র্যাবের এসব অভিযানে পাচারকারীরাও অনেক সময় ধরা পড়েন।এ ব্যাপারে মেজর রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,র্যাবের প্রতিটি অভিযানে পূর্ব প্রস্তুতি থাকে।গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যেসব অভিযান পরিচালনা করা হয়,এ অভিযানের পূর্বে দীর্ঘ আলোচনা ও পর্যালোচনাও করা হয়। প্রতিহিংসামূলক নাকি সঠিক সংবাদ দেয়া হয়েছে বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হয়। এজন্য র্যাবের অভিযান ব্যর্থ হয় না বলেও জানান মেজর রুহুল।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.