পদ্মাসেতুর ২৫তম স্প্যান বসবে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই। এরই মধ্যে এর প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে মাওয়া প্রান্তে। সেতুর স্প্যান তুলে ধরার অপেক্ষায় রয়েছে তিয়ানহো ক্রেন। এরপর আরও একটি স্প্যান বসবে এ মাসেই। এদিকে, সেতুর সবশেষ চারটি পিয়ার বা খুঁটির কাজেও এসেছে অগ্রগতি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবশেষ ড্রাইভিং হওয়া ২৬ নম্বর খুঁটির কাজ এপ্রিলেই শেষ হবে।শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পদ্মাসেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ১০, ১১, ২৬ ও ২৭ নম্বর পিয়ার এখনো ওঠেনি নদীর বুক থেকে। চারটি পিয়ারের কাজই চলছে। এ মাসে ১০ ও ১১ নম্বর পিয়ারের কাজ শেষ হবে। এদিকে, ৮ নম্বর পিয়ারের কাজ শেষে এখন চলছে ক্যাপ ঢালাই। সিংগেল ক্যাপ বসেছে এই ৮ নম্বরে। সেতুর ৭, ১৩, ১৯, ২৫, ৩১ ও ৩৭ নম্বর খুঁটি ছাড়া বাকি সবগুলোতেই বসেছে এমন সিংগেল ক্যাপ।
সেতুর মাওয়া প্রান্তে এরই মধ্যে ১৩ নম্বর খুঁটি থেকে শুরু করে ১৯ নম্বর খুঁটির ওপর বসেছে ছয়টি স্প্যান। এই প্রান্তে এর আগেও বসেছে ছয়টি স্প্যান। আবার জাজিরা প্রান্তে ৩০ নম্বর থেকে ৪২ নম্বর পর্যন্ত খুঁটিতে একাধারে ১২টি স্প্যান বসানোর পর ১৮০০ মিটার স্প্যান দৃশ্যমান হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পদ্মাসেতুর ২৪টি স্প্যানে ৩৬০০ মিটার দৃশ্যমান।
কেবল স্প্যান বসানো নয়, রোড ওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজও এগিয়ে চলেছে পদ্মাসেতুতে। মাওয়া প্রান্তে ১৩ থেকে ১৯ নম্বর পিলারে রোডওয়ে ও রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো চলছে। আর জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর খুঁটি থেকে ৩৮ নম্বর খুঁটি পর্যন্ত রোড ওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
এদিকে, জাজিরা প্রান্তে ২৬ ও ২৭ নম্বর পিলারের কাজ বাকি আছে। আর মাওয়া প্রান্তে বাকি কেবল ১০ ও ১১ নম্বর পিলারের কাজ। চলতি মাসে ১১ নম্বর পিলারে ক্যাপ বসবে। এরপর আগামী মাসে ১০ নম্বর পিলারে ক্যাপ বসানো হবে।
এর আগে, পদ্মাসেতুর ২৪তম স্প্যান বসানো হয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি। জাজিরা প্রান্তের ৩০ ও ৩১ নম্বর পিয়ারের ওপর স্থাপন করা হয় স্প্যানটি। তাতে করে ৩৬০০ মিটার দৃশ্যমান হয়ে ওঠে পদ্মাসেতু।
৪২টি খুঁটি ও ৪১টি স্প্যানে গড়ে তোলা হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মাসেতু। মূল সেতুর কাঠামোতে কাজ বাকি বলতে এখন ১৭টি স্প্যান আর চারটি খুঁটি। স্প্যানগুলো বসার সঙ্গে সঙ্গে রোড ওয়ে স্ল্যাব আর নিচে রেলপথ বসানোর কাজ চলছে সমানতালে। লক্ষ্য, আগামী বছরের জুনে চালু হবে পদ্মাসেতু।
সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য বলছে, এপ্রিলেই শেষ হবে বাকি পিলারের কাজ। আর জুলাই মাসে শেষ হবে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ। তখনই ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মাসেতুর পুরোটা দৃশ্যমান হবে। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া আর শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যেকার যে দূরত্ব এখন বিশাল হয়ে রয়েছে, সেটিও তখন নেমে আসবে একটুখানিতে।