একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ভোটারদের দরজায় কড়া নাড়ছে উক্ত সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে উক্ত সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের পদটি শূন্য হয়।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপ-নির্বাচন৷ মেয়র পদে প্রার্থী হতে ২৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত জমা দিয়েছিলেন ছয়জন। এর মধ্যে ববি হাজ্জাজ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ জন।
পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামকে নৌকা, জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাফিন আহমেদকে লাঙল, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিমকে টেবিল ঘড়ি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আনিসুর রহমানকে আম ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির শাহিন খান বাঘ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন।
তবে ৫ প্রার্থীর মধ্যে সব থেকে বেশি আলোচনায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। ডিএনসিসির প্রয়াত জনপ্রিয় মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার প্রত্যয় নিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে চালিয়ে যাচ্ছেন বিরামহীন প্রচার প্রচারণা।
ইতোমধ্যে সুস্থ, সচল আধুনিক ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করলেন ঢাকা উত্তর সিটির উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। সচল ঢাকার ক্ষেত্রে তার নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, সকল নগর পরিবহন ব্যবস্থার জন্য একটি ডিজিটাল, সমন্বিত ই-টিকিটিং সেবা চালু করা, যাতে থাকবে বয়স্ক, মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা; অ্যাপভিত্তিক ডিজিটাল সময়সূচী প্রবর্তন এবং আধুনিক, সু-নিয়ন্ত্রিত ও নারীবান্ধব গণপরিবহন নিশ্চিত করা। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ, আধুনিক ডিজিটালাইজড বাসস্টপ এবং নাগরিকবান্ধব বাস ও ট্রাক টার্মিনাল স্থাপন করা প্রয়োজন। সাইকেল ও মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা লেন ও সাইকেল পার্কিং সুবিধা তৈরি করা। পথচারীবান্ধব ফুটপাত, পর্যাপ্ত ফুট ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস নির্মাণ, সড়ক সংস্কার, জেব্রা ক্রসিংয়ে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করা ও এলাকাভিত্তিক বহুতল আন্ডারগ্রাউন্ড কার পার্কিং তৈরি করে গতিশীল ঢাকা বিনির্মাণ করা হবে।
এ ছাড়া আধুনিক ঢাকা গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নগরীর বর্ষাকালীন জলাবদ্ধতা নিরসন, পরিবেশবান্ধব সড়ক বাতি স্থাপন, ডিজিটাল ই-সার্ভিস চালু, দুর্নীতি রোধে অ্যাপভিত্তিক তথ্য প্রদান, সীমিত আয়ের মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, রাস্তাঘাটের আধুনিকায়ন, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম উৎসাহিত করা। এসব কাজ করতে পারলেই একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা তৈরি হবে। আতিকুল ইসলাম নির্বাচিত হলে এ কাজগুলোই করতে চান। এ জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এখন দেখার অপেক্ষা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির উপ-নির্বাচনে আগামী ৫ বছরের জন্য ঢাকা উত্তরের নগর পিতা হিসেবে কাকে বেছে নেয় নগরবাসী।