বিএনপির রাজনৈতিক স্থবিরতা এবং আন্দোলন বিমুখতার জন্য স্থায়ী কমিটি দায়ী বলে মনে করছেন দলটির একাধিক সংস্কারপন্থী নেতা। ২০১৬ সালে বৃদ্ধ, অথর্ব, ভীতু এবং আঁতাতকারীদের দলের স্থায়ী কমিটিতে স্থান দেয়ার বিএনপির রাজনীতি ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে যায় বলে মনে করছেন তারা।
বিএনপিকে মুখাপেক্ষী করে ড. কামালের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তিও দলের সাংগঠনিক গঠনকে দুর্বল করেছে। ঐক্যফ্রন্টকে গ্রহণ ও জামায়াতকে কার্যত বর্জন করে বিএনপি রাজনীতির মারপ্যাঁচে পরাজিত হয়েছে বলেও মনে করছেন তারা। বিএনপির একাধিক সংস্কারপন্থী নেতার সঙ্গে একান্ত আলাপকালে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দীর্ঘ অবসাদজনিত রাজনীতি এবং সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্য দলীয় হাইকমান্ডের রাজনৈতিক দূরদির্শতা দায়ী বলে মনে করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। মওদুদ আহমেদ জানান, ২০১৬ সালে যখন স্থায়ী কমিটিতে সদস্যপদ বিতরণ করা হয়, তখনই আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। স্থায়ী কমিটি হলো দলের হৃদপিণ্ড। হৃদপিণ্ড দুর্বল হলে তো শরীর অচল হয়ে পড়ে। সেই অবস্থাই হয়েছে দলের। আমরা বলেছিলাম-ব্যবসায়ী, আইনজীবীদের পদ না দিয়ে তুলনামূলক মধ্যবয়সী জনপ্রিয় নেতাদের পদ দেয়ার আবেদন করলেও সেটি প্রত্যাখ্যাত হয়। দুঃখ নিয়েই বলছি, অর্থের কাছে দলের নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শ বিক্রি করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অথর্ব, বৃদ্ধ, বিজনেস মাইন্ডেড মানুষদের স্থায়ী কমিটিতে জায়গা দেয়ায় দলের বারোটা বেজেছে। এরা আন্দোলন বিমুখ, শান্তিপ্রিয় ও নাগরিক আন্দোলন কর্মী। কমিটির অনেক সদস্যর বিরুদ্ধে গোপনে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাত করারও অভিযোগ রয়েছে। আজকের বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে দুর্বল চিত্তের নেতাদের সরিয়ে দেয়ার বিকল্প নেই।
এই বিষয়ে রাখঢাক ছাড়াই দলটি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সংস্কারপন্থী নেতা মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপির রাজনীতি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছে। জরাগ্রস্ত, অবসাদগ্রস্ত ও দাদু ভাইদের নিয়ে বিএনপি আন্দোলনের কথা বললে তো সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বুঝতে হবে। শিগগির জাতীয় কাউন্সিল করে তরুণদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। দলের ব্যর্থ সিনিয়র নেতাদের উদ্দেশ্য বলব, ধুকে ধুকে রাজনীতি করার চেয়ে অব্যাহতি নেয়া উত্তম।