সেনা তৎপরতায় ৩ দিনের মধ্যেই চালু হচ্ছে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ;চলবে হালকা যান


প্রকাশের সময় :১৮ জুন, ২০১৭ ১:৩৯ : পূর্বাহ্ণ 594 Views

সিএইচটি টাইমস নিউজ ডেস্কঃ-রাঙ্গামাটিতে ব্যাপক পাহাড় ধসের ঘটনায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দ্রুত সংস্কার করে তিন দিনের মধ্যে হালকা যানবাহন ও এক মাসের মধ্যে ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে খুলে দেয়া হবে।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের চিফ মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান শনিবার রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও রাস্তা পরিদর্শনে এসে তিনি রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।তিনি জানান,রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম সড়কে ১৪৫টি পয়েন্টে পাহাড় ধসে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।এ সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনার জন্য সেনাবাহিনীর ও সড়ক জনপথ বিভাগের সদস্যরা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে।বৃষ্টিপাত না হলে এই কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এ সময় সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার ও রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুক উপস্থিত ছিলেন।চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন,রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোও দ্রুত চালু করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।এছাড়া কাপ্তাই রাঙ্গামাটি নৌপথে পানি,জ্বালানি তেল ও পন্য পরিবহনসহ লোকজনের চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।তিনি সকলের সমন্বিত প্রয়াসে দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।পরে সেনাকর্মকর্তারা রাঙ্গামাটির মানিকছড়ির আর্মি ক্যাম্পের পার্শ্বস্থ সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও সুখী নীলগঞ্জের রাঙ্গাপানি ভাবনা কেন্দ্রে আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর শনিবার দুপুরে রাঙ্গামাটির পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও রাস্তা পরিদর্শন করেন।তিনি শহরের কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে দুর্গত লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহবান জানান।তিনি দুর্গতদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন।পরে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এক সমন্বয় সভায় বলেন,প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রাঙ্গামাটি দুর্গতদের জন্য যা কিছু করার সব কিছু করা হবে।পাহাড়ের এই বিপর্যয়ে রাজনৈতিক সমালোচনা না করে দলমত নিবিশিষে সকলকে রাঙ্গামাটির দূর্গত মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত নিয়ে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।বিশেষ করে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সহায়তা দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে দ্রুত খাদ্য ও বস্ত্র সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি পরামর্শ দেন।জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে প্রাপ্ত তথ্যে গত ৫ দিনে রাঙ্গামাটির পুরো জেলায় পাহাড় ধসে নিহতের সংখ্যা এখনো পর্যন্ত ১১৩।জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার খন্দকার ইফতেখার উদ্দিন আরাফাত জানান,শুক্রবার রাতে জুরাছড়ি উপজেলার দুর্গম দুমদুমিয়া ইউনিয়নে দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।তবে রাঙ্গামাটি শহরে আর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।এ নিয়ে রাঙ্গামাটি সদরে ৬৬ জন,জুরাছড়ি উপজেলায় ছয়জন,বিলাইছড়ি উপজেলায় দুইজন,কাপ্তাই উপজেলায় ১৮ জন এবং কাউখালী উপজেলায় ২১ জন মিলে মোট ১১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।এর মধ্যে শিশু-৩৩, মহিলা-৩২,পুরুষ ৪৮ জনের মরদেহ রয়েছে বলে তিনি জানান।এদিকে,রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের ঘটনায় নিহতদের উদ্ধার তৎপরতার আনুষ্ঠানিক সমাপ্ত ঘোষণা করা হলেও স্থানীয় লোকজনের দাবির মুখে শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা শহরের ভেদভেদী মুসলিম পাড়া ও লোকনাথ মন্দির এলাকায় আরো মরদেহের সন্ধানে উদ্ধার তত্পরতা চালান।রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান,স্থানীয় লোকজনের দাবী এই দুইটি এলাকায় কয়েকজন নিেঁখাজ থাকতে পারে।এ কারণে রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা শহরের দুইটি এলাকায় পাহাড় ধ্বসে নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে কাজ অব্যাহত রেখেছেন।তিনি জানান,পাহাড় ধ্বসে নিহতদের মরদেহ পানিতে ভাসছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে তারা উদ্ধার তত্পরতায় চালিয়েও এখনো পর্যন্ত কোথাও কোন মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি।ফায়ার সার্ভিসের দুইটি দল ভেদভেদী মুসলিম পাড়া ও লোকনাথ মন্দির এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে বিকাল পর্যন্ত কোন মরদেহের সন্ধান না পাওয়ায় বিকেলে উদ্ধার তত্পরতা শেষ করে।(((আলমগীর মানিক,সিএইচটি টাইমস টুয়েন্টি ফোর ডটকম)))

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!