দেশে আরো আটজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন সংক্রমিত হয়েছেন ৬৩৬ জন। সুস্থ হয়েছেন আরো ৩১৩ জন। শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বিকেলে অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে জানানো হয়, দেশে এ পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৭৭০ জন। মারা গেছেন ২১৪ জন এবং মোট সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৪১৪ জন। এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মোট এক লাখ ১৬ হাজার ৯১৯টি।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার নাসিমা সুলতানা বুলেটিনে জানান, শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী আটজনের সবাই পুরুষ। এর মধ্যে ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে দুজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুজন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন। এখন আইসোলেশনে আছেন দুই হাজার ১৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৫৩ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৪৩ জন।
অন্যদিকে এখন পর্যন্ত দুই লাখ আট হাজার ৪০৫ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। যেখান থেকে মোট ছাড়া পেয়েছেন এক লাখ ৭১ হাজার ২২২ জন। এখন মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৭ হাজার ১৮৩ জন। বুলেটিনে জানানো হয়, পরীক্ষা ও আক্রান্তের হারের চেয়ে সুস্থ হওয়ার আনুপাতিক হার বেশি। এ ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড় পাওয়া ব্যক্তিদের জন্য বাড়িতে থাকার সময় নির্দেশনা অনুযায়ী পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
বুলেটিনের শুরুতে করোনাভাইরাসের পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন ও সতর্ক হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
কোন জেলায় কত আক্রান্ত : আইইডিসিআর গতকাল সকাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ৪২৩ জন জানালেও এলাকা ভিত্তিক যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে তিন হাজার ৮৯১ জন রোগীর সংখ্যা জানানো হয়েছে। বাকি প্রায় আড়াই হাজার রোগী ঢাকার কোন এলাকায় সে তথ্য নেই। এ ধরনের তথ্য বিভ্রাট সারা দেশে জেলাভিত্তিক রোগীর তালিকার ক্ষেত্রেও । এতে ১৩ হাজার ৭৭০ রোগীর মধ্যে ১১ হাজার ৪৭ জন রোগীর তথ্য জানানো হয়েছে। আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই অসম্পূর্ণ তথ্যানুসারে মহানগরসহ ঢাকা জেলায় ৬,৬২৩, গাজীপুর ৩৩২, কিশোরগঞ্জ ২০২, মাদারীপুর ৫৪, মানিকগঞ্জ ২৮, নারায়ণগঞ্জ ১১৭৭, মুন্সীগঞ্জ ২১২, নরসিংদী ১৭১, রাজবাড়ী ২৩, ফরিদপুর ২১, টাঙ্গাইল ৩১, শরীয়তপুর ৫৭ ও গোপালগঞ্জে ৫০ জন। চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলায় ২০৭, কক্সবাজার ৭৭, কুমিল্লা ১৫৯, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫৭, খাগড়াছড়ি ৩, লাক্ষ্মীপুর ৫৮, বান্দরবন ৪, রাঙামাটি ৪, নোয়াখালী ২৭, ফেনী ৮ ও চাঁদপুরে ৫৫ জন। সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার ৩০, সুনামগঞ্জ ৩৭, হবিগঞ্জ ৭০ ও সিলেটে ২৮ জন। রংপুর বিভাগের রংপুর জেলায় ১২০, গাইবান্ধা ২৪, নিলফামারী ৪১, লালমনিরহাট ১৩, কুড়িগ্রাম ৩৪, দিনাজপুর ৩৮, পঞ্চগড় ১০ ও ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩ জন। খুলনা বিভাগের খুলনায় ২০, যশোর ৭৯, বাগেরহাট ৩, নড়াইল ১৩, মাগুরা ১২, মেহেরপুর ৫, সাতক্ষীরা ৪, ঝিনাইদহ ৩৮, কুষ্টিয়া ২০ ও চুয়াডাঙ্গায় ২৩ জন। ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলায় ২১২, জামালপুর ১০৪, নেত্রকোনা ৬৮ ও শেরপুরে ৩০ জন। বরিশাল বিভাগের বরগুনা ৩৫, ভোলা ৭, বরিশাল ৪৮, পটুয়াখালী ২৮, পিরোজপুর ৬ ও ঝালকাঠিতে ১৩ জন। রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলায় ৩৯, পাবনায় ১৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১৪, বগুড়ায় ১৮, নাটোর ১২, নওগাঁ ২৪, সিরাজগঞ্জ ৬ ও রাজশাহীতে ২৬ জন করোনা আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন।
রাজধানীতে বেশি আক্রান্তের দশ এলাকা : আইইডিসিআরের তথ্যানুসারে রাজধানীতে ২০০ জন আক্রান্ত হয়ে প্রথম অবস্থানে আছে রাজারবাগ, দ্বিতীয় স্থানে থাকা যাত্রাবাড়ীতে আক্রান্ত ১৮২ জন আর ১৭৩ জন আক্রান্ত হয়ে তৃতীয় স্থানে আছে কুড়িল। এরপর যথাক্রমে ১০ স্থান পর্যন্ত রয়েছে, মহাখালী ১৫৯ জন নিয়ে চতুর্থ, মুগদা ১৫৬ জন নিয়ে পঞ্চম, মোহাম্মদপুর ১৩২ জন আক্রান্ত হয়ে ষষ্ঠ, লালবাগ ১০৬ জন হয়ে সপ্তম, তেজগাঁও ১০১ জন আক্রান্ত হওয়াতে অষ্টম, মালিবাগ ৮৩ জন আক্রান্ত হয়ে নবম এবং উত্তরা ৮১ জন আক্রান্ত হওয়াতে দশম স্থানে রয়েছে।