সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী সংকটে বিএনপি, দিকভ্রান্ত নেতারা!


নিউজ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২:৫২ : অপরাহ্ণ 565 Views

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র বাছাইয়ের পর অধিকাংশ আসনেই প্রার্থী শূন্যতা দেখা দিয়েছে বিএনপির। দুর্নীতি, ঋণ খেলাপিতে জর্জরিত বিএনপির নেতারা মনোনয়নের শেষ দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চূড়ান্ত বাছাইয়ে নানা নৈতিকস্খলনের দায়ে তৈরি হওয়া প্রার্থী সংকটে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েছে দলীয় শীর্ষ নেতারা। রাজনীতি সচেতন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, বিএনপিতে দুর্নীতি, ঋণ খেলাপিতে জর্জরিত ব্যক্তিদের আসল চরিত্রের পরিস্ফুটন ঘটেছে ইসির অনুসন্ধানে।

সূত্র বলছে, মনোনয়ন পত্র বাছাইয়ের ফলে বগুড়া–৭, ঢাকা-১, মানিকগঞ্জ-২, জামালপুর-৪, রংপুর-৫ ও শরীয়তপুর–১ সহ দেশের বিভিন্ন আসনে যে প্রার্থী সংকট তৈরি হয়েছে তা থেকে উত্তরণের কোন পথ খুঁজে পাচ্ছে না বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা।

নির্বাচন কমিশনের সূত্র মতে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য বগুড়া-৭ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়। অন্যদিকে তার বিকল্প হিসেবে প্রার্থী করা হয় গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ মিলটনকে। কিন্তু বাছাইয়ে দু’জনের মনোনয়নপত্রই বাতিল হয়েছে। দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ায় খালেদা জিয়ার এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগপত্র জমা না দেয়ায় মোরশেদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খোন্দকার আবু আশফাক এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সাংসদ ফাহিমা হোসাইন জুবলীর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে। ঢাকা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র বলেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে আশফাকের পদত্যাগের নথি নির্বাচন কমিশনে না পৌঁছানোয় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। স্বাক্ষরসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ফাহিমার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর, হরিরামপুর ও সদরের তিন ইউনিয়ন) আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরের গরমিল হওয়ায়। এই আসনের বিএনপির আরেক প্রার্থী সিঙ্গাইর উপজেলা চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান খান। তার পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ি) আসনে বিএনপির প্রার্থী সরিষাবাড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরিদুল কবির তালুকদারের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায়। এই আসনে বিএনপির বিকল্প কোনো প্রার্থী ছিলেন না।

রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক সাংসদ সোলায়মান আলম ফকির এবং জেলা বিএনপির সদস্য মমতাজ হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে নথিতে ত্রুটি থাকায়।

শরীয়তপুর–১ আসনে বিএনপির প্রার্থী সরদার নাসিরউদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে টেলিফোন বিল বকেয়া থাকায়। ১৯৮৮ সাল হতে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত টেলিফোন বিল বকেয়া থাকায় বাছাই কালে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী আবু তাহের।

এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে তা অনুসন্ধান না করে প্রার্থী নির্বাচন করা দলের জন্য একটি বড় ধরণের বোকামি। মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার আগেও যদি দলের পক্ষ থেকে যা এখন আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আমি ইসির এই পদক্ষেপকে বিতর্কিত করতে চাই না। কেননা, এই পদ্ধতি তো সংবিধান সম্মত। কিন্তু প্রার্থী নিয়ে যে সংকটে পড়তে হলো তা থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আমরা শঙ্কিত!

 

ট্যাগ :

আরো সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা



আর্কাইভ
November 2024
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আলোচিত খবর

error: কি ব্যাপার মামা !!