বৈশ্বিক করোনা মহামারির পর বহির্বিশ্বের শ্রমবাজারে ফিরছে সুদিন। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে রিসিভিং কান্ট্রিগুলোতে পুরোদমে জনশক্তি রফতানি শুরু হয়েছে। করোনার পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ছে। জনশক্তি রফতানির সর্বোচ্চ শ্রমবাজার সউদী আরবে ভিসা ইস্যুর সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ভ্রাতৃপ্রতীম মুসলিম দেশগুলোর সাথে বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। এ সুবাদে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মী নিয়োগের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জনশক্তি রফতানিতে গতি বাড়ায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তি এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশ থেকে পুরোপুরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী আয়ের গুরুত্ব অনেক। করোনাকালে দেশের অর্থনীতি যখন স্থবির ছিল, যখন গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত গুরুত্বপূর্ণ সব খাত, এ সঙ্কটের মধ্যেও প্রবাসী আয়ে রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। স্থবির অর্থনীতিতে শক্তি যুগিয়েছিল সচল রেমিট্যান্স প্রবাহ। তবে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে হঠাৎ করেই ধীরগতি দেখা যায় প্রবাসী আয়ে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকেই রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমতে শুরু করে। সদ্যবিদায়ী অক্টোবর মাসেও রেমিট্যান্স আয়ে ধীরগতি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিএমইটির সূত্র জানায়, চলতি বছর গত জানুয়ারি থেকে গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৪৪ জন নারী-পুরুষ কর্মী বিদেশে গেছে। এর মধ্যে অক্টোবর মাসেই সউদীতে গেছে ৫১ হাজার ৪২৫ জন কর্মী। একই মাসে ওমানে চাকরি নিয়ে গেছে ৫ হাজার ১০১ জন কর্মী। প্রবাসী কর্মীর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সউদী নিয়োগকারীরা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ থেকে প্রচুর কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র ইস্যু করছে। ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ গত দু’সপ্তাহ প্রচুর ওয়ার্ক ভিসা ইস্যু করছে। দূতাবাস থেকে প্রতিদিন কোনো কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি ৩০ থেকে ৪০টি ওয়ার্ক ভিসা হাতে পেয়েছিল। আগে দূতাবাসে ৩০টি পাসপোর্ট জমা দিলে মাত্র ১০ থেকে ১১টি ভিসা মিলত। গত রোববার থেকে সউদী দূতাবাস পুনরায় ভিসা ইস্যুর সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এতে অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পথে। ফলে সউদীগামী কর্মী ও রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা চরম হতাশায় ভুগছেন।
এদিকে, বিএমইটি থেকে বিদেশগামী কর্মীদের বহির্গমন ছাড়পত্র হাতে পেতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর গলদঘর্ম। বিদেশগামী কর্মীর ছাড়পত্র ও স্মার্টকার্ড পেতে বিএমইটির টেবিলে টেবিলে ধরণা দিয়ে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে এজেন্সির প্রতিনিধিরা। বিদেশগামীদের অনেকেই স্মার্টকার্ড এক সপ্তাহেও পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। বহির্গমন ছাড়পত্র ও স্মার্ট কার্ড পেতে চরম হয়রানি ও অহেতুক বিলম্ব হওয়ায় রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতিনিধিরা গতকাল বিএমইটিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিদেশগামী কর্মীদের হয়রানি বন্ধ, বিএমইটির অব্যবস্থাপনার নিরসন এবং দ্রুত স্মার্টকার্ড সরবরাহের দাবি জানায়। বকশিস না দিলে বহির্গমন ইস্যুর ফাইল নড়াচড়া করে না বলেও অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে। যারাই ডিজির দফতরে লাইন ধরতে পারে, তারাই স্বল্পসময়ে বহির্গমন ছাড়পত্র পাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে।
ঐ সূত্রটির মতে, অভিবাসন আইন ২০১৩ এর শর্তভঙ্গ করে বিএমইটির ডিজির নির্দেশে গত ৩১ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে প্রতি ফাইলে ৯৯ জন করে ভিজিট ভিসার সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়ন ছাড়াই বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিএমইটির কর্মকর্তাদের মাঝে নানা প্রশ্ন উঠছে। উল্লেখিত ভিজিট ভিসার অনুমোদন নেয়ার জন্য প্রবাসী সচিবের কাছে চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। বিএমইটির ডিজি শহিদুল আলম গতকাল রাতে ইনকিলাবকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে মানুষ যাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়, তার জন্য ভিজিট ভিসায় বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতির জন্যও পাঠানো হয়েছে।
বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যুতে বিলম্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, দৈনিক প্রায় ছয় হাজার বহির্গমন ছাড়পত্র হয়। সবগুলো আমার কাছে আসে না। একদিনেই দেই আর যেগুলো যাচাই-বাছাই প্রয়োজন হয়, সেগুলো দু’একদিন দেরি হয়। প্রতিনিধিদের বিক্ষোভ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় হয়েছে জানি না। কোনো হয়রানি অনিয়ম ছাড়াই বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যু করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
সউদী আরবের জেদ্দার প্রবাসী বিনিয়োগকারী তাহসিন ইউনাইটেড জেনারেল কনট্রাটিং কোং লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী জালাল আহমদ ইনকিলাবকে জানান, রাজকীয় সউদী সরকার অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে করোনা মহামারি পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কারণে দেশটিতে করোনা পরিস্থিতি বর্তমানে শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্থানীয়ভাবে মাস্ক ব্যবহার ও সাধারণ জনগণের দ্বারে দ্বারে তাপ মাপার প্রক্রিয়া তুলে দিয়েছে। শুধু অফিস ও মার্কেটে মাস্ক চালু আছে। প্রবাসী বিনিয়োগকারী জালাল আহমদ বলেন, করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় সউদীতে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের পথ সুগম হচ্ছে। সউদীতে বর্তমানে বাংলাদেশিদের প্রচুর চাহিদাপত্র ইস্যু হচ্ছে।
রিক্রুটিং এজেন্সিজ ঐক্য পরিষদের সভাপতি এম টিপু সুলতান ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ প্রচেষ্টায় ভ্রাতৃপ্রতীম সউদী সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ২৫ শতাংশ কোটা বর্তমানে ৪০ শতাংশ উন্নতি করেছে। এতে দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র ইস্যুর পরিমাণ রাতারাতি বাড়ছে। তিনি বলেন, প্রায় দু’হাজার রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ৭০০ এজেন্সি ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাসে তালিকাভুক্ত আছে। শত শত রিক্রুটিং এজেন্সি দূতাবাসের চাহিদানুযায়ী কাগজপত্র জমা দিয়েও তালিকাভুক্ত হতে পারছে না। তিনি সউদীর বৃহৎ শ্রমবাজার ধরে রাখার স্বার্থে দূতাবাসের তালিকাভুক্তকরণের লক্ষ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দ্বিতীয় শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে ভিজিট ভিসার পাশাপাশি নতুনভাবে এমপ্লয়মেন্ট ভিসা চালু করেছে। দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম সচিবের সত্যায়নের ভিত্তিতে এ দু’ক্যাটাগরির ভিসার কর্মীরা সরকারি স্মার্টকার্ড নিয়েই চাকরি লাভ করছে। রিক্রুটিং এজেন্সি মিড লাইন ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ফজলুল মতিন তৌহিদ এতথ্য জানিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যতে এমপ্লয়মেন্ট ভিসায় কয়েকজন কর্মী এর মধ্যেই দেশটিতে কাজ নিয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জনশক্তি রফতানির এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২২ সালে জনশক্তি রফতানি রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।
এদিকে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি বলেছেন, বর্তমানে বিদেশে কর্মী গমনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, গত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মোট দেড় লাখেরও বেশি কর্মী কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশে গেছেন। তিনি আরো জানান, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র আসছে। মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের হার কোভিড পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে এসেছে। এই প্রবাহ চলমান থাকলে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমলেও খুব শিগগিরই এটা ঊর্ধ্বমুখী হবে। প্রবাসী মন্ত্রী সম্প্রতি সংসদ ভবনের কেবিনেট কমিটি কক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৪তম সভায় এসব কথা বলেন।
করোনা পরিস্থিতির পর ইউরোপের দেশগুলোতেও নতুনভাবে বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। সম্প্রতি রোমানিয়া সফল শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন দেশটিতে ৪০ হাজার কর্মী যাবে। সম্ভাবনাময় নতুন এই শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে চায় সরকার। এরইমধ্যে স্বল্প খরচে খুব সহজেই কাজের ভিসা নিয়ে দেশটিতে পাড়ি জমাতে শুরু করেছেন বাংলাদেশিরা। এতে ইউরোপের শ্রমবাজারে নতুন আশার আলো দেখা দিয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু জনশক্তি রফতানিকারক ইউরোপের শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ইতালিতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। এতে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের মাঝে আশার আলো দেখা দিয়েছে। বিএমইটির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, করোনা মহামারি কমে আসায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ইউরোপের রুমানিয়া, হাঙ্গেরী, ক্রোয়েশিয়া, চেক রিপাবলিকান ও সার্বিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় কর্মী যাওয়া শুরু হয়েছে। সর্বশেষ রোমানিয়ার জাহাজ নির্মাণ কোম্পানিতে অর্ধশত শ্রমিক যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পরবর্তী সময়ে আরো বেশকিছু কর্মী জাহাজ, ইমরাত নির্মাণ ও গার্মেন্ট কোম্পানিতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। সে লক্ষ্যে চলতি মাসেই কর্মী বাছাইয়ের জন্য রোমানিয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে বলে রিক্রুটিং এজেন্সি এশিয়া কন্টিনেন্টাল বিডির স্বত্বাধিকারী লোকমান শাহ ইনকিলাবকে জানিয়েছেন। লোকমান শাহ ইনকিলাবকে বলেন, করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সঙ্কুচিত হয়ে আসছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন নতুন শ্রমবাজার সন্ধানের নির্দেশ দেন। এ কাজটি শুধু সরকারের হাতে ছেড়ে না দিয়ে আমরাও বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যক্তি উদ্যোগে নতুন বাজার খুঁজতে সচেষ্ট হই। পরে পরিশ্রমের ফসল হিসেবে রোমানিয়ায় কর্মী প্রেরণের সুযোগ সৃষ্টি করি। সবার সহযোগিতা পেলে আরও নতুন নতুন শ্রমবাজার পাওয়ার আশা রাখি।
গত ১৪ অক্টোবর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মসংস্থান শাখা-১ উপসচিব সুষমা সুলতানা স্বাক্ষরিত নিয়োগানুমতি সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হয় এশিয়া কন্টিন্টোল গ্রুপকে। চিঠিতে বলা হয়, উপযুক্ত বিষয়ে রিক্রুটিং এজেন্ট মেসার্স এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপের (বিডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোমানিয়ায় ‘সান্তেরুল নেভাল কন্সটানটা সা’ কোম্পানির অধীনে মোট তিনটি ক্যাটাগরিতে শর্তসাপেক্ষে ৬০ জন পুরুষ কর্মী নিয়োগানুমতি জ্ঞাপন করা হলো।’ লকস্মিথস ফর স্টিল হুল ব্লক ফেব্রিকেশন, পাইপ ওয়ার্কার্স ফর ফেব্রিকেশন অ্যান্ড ইন্সটলেশন অব পাইপ অ্যান্ড ওয়েল্ডার পদে ৬০ জন কর্মী নেয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, প্রত্যেক কর্মীর মাসিক বেতন হবে ৫৬০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় অর্ধলাখ টাকার কাছাকাছি।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার শ্রমবাজারের সম্ভাবনাময় দেশ ব্রুনাইয়ে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। করোনার কারণে বিগত দু’বছর যাবত অভিবাসী কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় দেশটিতে কর্মী সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করছে। ব্রুনাই সরকার বাংলাদেশ থেকে বোয়েসেলের মাধ্যমে কর্মী নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কর্মী নিয়োগের আগে দেশটির সরকার দালাল চক্রের প্রতারণা বন্ধ এবং বৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পন্ন করতে বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশটির সরকার সমঝোতা স্মারকের প্রস্তাবিত খড়সা দেশটির বন্দরসেরি নেগারা দারুস সালামস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার নাহিদা রহমান সুমনার কাছে প্রেরণ করেছে। কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলে চিহ্নিত দালাল চক্রের উপদ্রব বন্ধ হবে এবং হাইকমিশনের সত্যায়নের ভিত্তিতে দেশটিতে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের দ্বার উন্মোচিত হবে। ব্রুনাইস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম সচিব জিলাল হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কুয়ালালামপুর থেকে প্রবাসী সাংবাদিক এম এ আবির জানান, সম্প্রতি মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনার গোলাম সাওয়ার স্থানীয় দু’টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের অনুরোধ জানান। এ সময়ে পেনাং রাজ্যে বাংলাদেশি প্রকৌশলী নিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা।