মিয়ানমারের অব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে গেলেও বাংলাদেশ মানবিকতা বিবেচনায় জোর করে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠায়নি। বাংলাদেশের মানবিকতা ও সহায়তার সুযোগ নিয়ে কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক সমাবেশও করিয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ না ছাড়ার জন্য রোহিঙ্গাদের নানা উসকানি দেয়ার অভিযোগও রয়েছে একাধিক এনজিওর বিরুদ্ধে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের দেশীয় অস্ত্র সরবরাহসহ উসকানি দেয়ার অভিযোগে দুটি এনজিওর কার্যক্রম স্থগিত করেছে সরকার। জানা যায়, কিছু এনজিও ও কুচক্রী মহলের সহায়তায় রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে মোবাইল ব্যবহার করছিল। দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক শিথিল করেছে সরকার। যদিও সরকারের এই নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করছে কিছু এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কথিত মানবাধিকারের নামে নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছে কিছু মহল।
জানা গেছে, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা দেওয়াই শুধু নয়, উন্নত অবকাঠামো নির্মাণ এবং অবাধ চলাফেরার সুযোগসহ এ দেশে রোহিঙ্গাদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছে কিছু সংস্থা। বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতা ও নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি অনুধাবন করেও বিশেষ মহলের ইশারায় রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এসব করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছে, এ দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পানি ও স্যানিটেশন সেবা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। আসলে অ্যামনেস্টির দাবিটি সঠিক নয়। বিশুদ্ধ পানির জন্য শত শত পানির পাম্প বসিয়েছে সরকার। স্যানিটেশনের জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে একটি সূত্র বলছে, মোবাইল নেটওয়ার্ক শিথিল হওয়ায় বিভিন্ন তথ্য পাচার, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ীকরণের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় শঙ্কায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ভাড়া করে এসব দাবি জানাচ্ছে কিছু দেশি ও আন্তর্জাতিক কুচক্রী মহল।
অন্যদিকে, রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অনৈতিক দাবি তুলে ধরায় বিভিন্ন সংগঠনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক দেশের কূটনীতিকরা। তারা বলছেন, মানবিক আশ্রয়ের বিষয়টিকে নিয়ে সুবিধা আদায়ের কৌশল করেছে কিছু মহল। যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিপদে পড়ে এ দেশে আসা রোহিঙ্গাদের অতিথি হিসেবে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এখন ‘অতিথিরা’ দাবি করতে পারে না যে দাবি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা যাবে না। এছাড়া, মিয়ানমারের কাছে রোহিঙ্গাদের দাবি-দাওয়ার মধ্যে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না।