একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় ধরণের পরাজয়ের পর এবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মহাসচিব পদ থেকে অপসারণ করে বিএনপিতে নতুন করে কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে অঘোষিতভাবে নতুন মহাসচিব হিসেবে নিযুক্ত করে দলের এই পুনর্গঠন কাজ এগিয়ে চলছে বলেও বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিএনপি সূত্র বলছে, লন্ডন থেকে তারেক রহমানের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইতোমধ্যেই নিজের পছন্দসই লোকদের নিয়ে দল পুনর্গঠনের জন্য কাজ শুরু করেছেন। বিশেষ করে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বাদ দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে সামনের সারিতে রেখে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন দলকে নতুনভাবে সাজাতে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার রচিত দুটি গ্রন্থের প্রকাশনা-পাঠ ও আলোচনা সভায় দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে নেতাকর্মীদের হতাশ না হওয়ার কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে যা দুর্বলতা আছে তা খুঁজে বের করে দলকে শক্তিশালী করা হবে। আপনারা হতাশ হবেন না। দলকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
মোশাররফের এমন মন্তব্যের বিষয়ে এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের সংকেত না পেলে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে এমন মন্তব্য কখনোই করতেন না। মোশাররফ হোসেনের এমন মন্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নতুন নেতৃত্বের সন্ধানে মাঠে নেমেছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের এক নেতা বলেন, তারেক রহমান বিএনপির বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ওপর চরম অসন্তুষ্ট। তারেক রহমান ইতোমধ্যেই রিজভীকে সাথে নিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে দল পুনর্গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। ফখরুলের সীমাহীন ব্যর্থতার জন্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনই তারেক রহমানের প্রথম পছন্দ বলেও অভিমত পোষণ করেন দলটির এই নেতা।
প্রসঙ্গত, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য প্রায় দুই সপ্তাহ সিঙ্গাপুর ছিলেন। গোপনে তারেক রহমানের সাথে দেখা করতে লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তারেক রহমানকে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হয়ে পুনরায় সিঙ্গাপুরে ফিরে আসেন দলটির এই মহাসচিব।