একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঋণখেলাপি ও দুর্নীতির দায়ে টাঙ্গাইল-৮ আসনে (সখীপুর-বাসাইল) মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় ক্ষমতা ‘সিদ্দিকী পরিবারে’ রাখতে নিজ মেয়ে কুড়ি সিদ্দিকীর কাছে মনোনয়ন হস্তান্তর করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।
জানা গেছে, বাতিল হওয়া মনোনয়ন বিক্রি করতে উচ্চমূল্য হাকলেও তাতে কেউ রাজি না হওয়ায় তিনি কুড়ি সিদ্দিকীকেই নির্বাচনে এনেছেন। কিন্তু ওই আসনে কুড়ি সিদ্দিকীর জয় নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। এরইমধ্যে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান প্রকাশ্যে কুড়ি সিদ্দিকীকে প্রতিহত করার ঘোষণাও দিয়েছেন।
জানা গেছে, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় কাদের সিদ্দিকী ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতাদের কাছে ওয়াদা করেছিলেন, কোন অভিযোগের দায়ে যদি টাঙ্গাইলের আসনে তিনি নির্বাচন করতে না পারেন তবে অন্তত একটি আসন ছেড়ে দেবেন অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খানকে। কিন্তু ঋণখেলাপি ও দুর্নীতির দায়ে কাদের সিদ্দিকীর তার রং বদলাতে শুরু করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই আসনের বিএনপির কর্মীরা কুড়ি সিদ্দিকীকে নির্বাচনে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে কুড়ি সিদ্দিকীর পরাজয় অবশ্ব্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানতে বাংলা নিউজ পোস্টের সঙ্গে কথা হয় অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়ন বাতিল সংক্রান্ত ঝামেলা হলে টাঙ্গাইল-৮ আসনটি আমাকে ছেড়ে দেবে এমন কথা ছিলো। কিন্তু তিনি আসন বিক্রির জন্য আমার কাছে ১ কোটি টাকা উৎকোচ দাবি করেন। টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে নির্বাচন করার পক্ষে আমি নেই। এছাড়া টাঙ্গাইল-৮ আসনের ঐক্যফ্রন্ট সমর্থকরা এই আসনে আমাকে চাচ্ছেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে কাদের সিদ্দিকী নিজের মেয়েকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাই বিএনপির সমর্থকরা কাদের সিদ্দিকীকে প্রতি প্রতিশোধ নিতে কুড়ি সিদ্দিকীকে প্রতিহত করবে। কারণ তারা বাপ-মেয়ে দু’জনই বেইমান। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, নির্বাচনে কুড়ি সিদ্দিকীকে ঐক্যফ্রন্টের কোন নেতা-কর্মী ভোট দেবে না।
এদিকে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি সভাপতি সামছুল আলম তোফা’র বরাতে কুড়ি সিদ্দিকীকে প্রতিহত করার ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, কাদের সিদ্দিকী প্রতিজ্ঞা করেও কথা রাখেননি। তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হলে কথা ছিলো আসনটি আজম ভাইকে ছেড়ে দেবেন। কিন্তু নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার পর আহমেদ আজম খান ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মাহমুদুল হাসান ভাইয়ের কাছে ১ কোটি টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন হস্তান্তর করতে উঠেপড়ে লাগেন। কিন্তু তারা ১ কোটি টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন কিনতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি তার মেয়ে কুড়ি সিদ্দিকীকে নির্বাচনে এনেছেন। এ নিয়ে টাঙ্গাইল-৮ আসনের বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কেননা, কুড়ি সিদ্দিকী কাদের সিদ্দিকীর মেয়ে হলেও রাজনীতিতে জনপ্রিয় নয়। ফলে জনপ্রিয়তা বিবেচনায় দরকার ছিলো আজম খান অথবা মাহমুদুল হাসান ভাইকে। তা না হওয়ায় এই আসনে কুড়ি সিদ্দিকীকে যেকোন মূল্যে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন নেতাকর্মীরা। আমরাও নেতাকর্মীদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন দিয়েছি।