নানা সমালোচনার মুখে বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু করেছে বিএনপি। যার প্রেক্ষিতে দীর্ঘ ২৭ বছর পর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচন করেছে বিএনপি।
এবার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে যুবদল, কৃষকদল ও তাঁতীদলের মতো অঙ্গ-সংগঠনগুলোর নতুন নেতৃত্ব বাছাই করতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড। কিন্তু শক্তিশালী সিন্ডিকেট, কোন্দল ও দ্বন্দ্বের কারণে নেতৃত্ব অঙ্গ-সংগঠনগুলোর নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়াকে একপ্রকার চ্যালেঞ্জই মানছেন দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। বিএনপির দু’জন সিনিয়র নেতার সাথে আলাপকালে এই চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানা গেছে।
দলের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নতুন কমিটির গঠনের প্রসঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপিকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা সমালোচনা ছিল। অনেকেই বলতেন, দলটিতে গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব রয়েছে। ছাত্রদলের কাউন্সিল সম্পূর্ণ করে সেইসব সমালোচনার কড়া জবাব দিয়েছি আমরা। এখন যুবদল, কৃষকদল ও তাঁতীদলের কাউন্সিল করতে চাই। তবে এখানে কিছু সমস্যাও রয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ কিছু শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে যারা কাউন্সিলের পরিপন্থী। পদ ধরে রাখতে তারা বিভিন্ন মহলে দেন-দরবার করছে। তাদের কারণে অঙ্গ-সংগঠনগুলোর কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, তবে যাবতীয় কোন্দল, মনমালিন্য ও বিভেদ দূর করে বিএনপিকে শক্তিশালী করে রাজপথে নামাতে আমাদের নেতা তারেক রহমান বদ্ধপরিকর। দলকে বাঁচাতে প্রয়োজনে আগাছা পরিষ্কার করা হবে। সেক্ষেত্রে কে কোন পন্থী তা দেখা হবে না। বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা থেমে যাবো না। বিএনপিকে সচল করতে হলে অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে নতুন কমিটির মাধ্যমে শক্তিশালী করা হবে।
এদিকে বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভোটের মাধ্যমে যুবদল, কৃষকদল ও তাঁতীদলের কমিটি করার পক্ষে মত দিয়েছেন তারেক রহমান। কিন্তু দলের কিছু সিন্ডিকেট সমঝোতা করে ভোট বাদ দিয়ে সিলেকশন করে কমিটি করতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। দলের কিছু সিনিয়র নেতা অঙ্গ-সংগঠনগুলোর কমিটিতে নিজেদের আশীর্বাদপুষ্টদের শীর্ষ পদে আনতে তারেক রহমানকে নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের কোন তদবির এবার কাজে আসবে। বিএনপি আর অর্থের কাছে বিক্রি হবে না। শত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে হলেও আমরা বিএনপিকে রাজপথে ফেরাবই।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে অনেক কমিটিই কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত হয়নি। বিভিন্ন কমিটি গঠনে আর্থিক অনিয়ম, ত্যাগীদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয় ও সুবিধাবাদীদের নেতৃত্বে আনা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। যার কারণে দলবিমুখ হয়েছেন অনেক ত্যাগী নেতা। সব ভুল-ত্রুটি শুধরে এবার শুদ্ধি অভিযান চালাবে বিএনপি। দল বাঁচাতে এর বিকল্প সামনে কিছু নেই।