সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে পাঠানো ১০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা ঢাকা পৌঁছেছে।গতকাল শনিবার বিকেলে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে টিকাগুলো হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে টিকার চালান গ্রহণ করেন। এরপর সংরক্ষণের জন্য তা বেসরকারি কোম্পানিটির ওয়্যারহাউজে নিয়ে যাওয়া হয়।
বেক্সিমকো সাথে সেরাম ইনস্টিটিউটের চুক্তি অনুযায়ী গত ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে মোট তিন কোটি টিকা আসার কথা ছিল। কিন্তু ভারতে করোনা মহামারী পরিস্থিতির মারাত্মক অবনিত হলে হঠাৎ করে টিকা রফতানি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে ফেব্রুয়ারিতে ৫০ লাখ এবং মার্চে ২০ লাখ টিকা আসার পর বাংলাদেশে কোভিশিল্ড আসা বন্ধ হয়ে যায়। ভারতে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলে সম্প্রতি টিকা রফতানি নিষেধজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। আর রফতানির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়।
সেরামের ৭০ লাখের বাইরে বাংলাদেশকে ৩২ লাখ টিকা উপহার হিসাবে দিয়েছিল ভারত। এ সব নিয়েই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছিল সরকার। মাঝপথে ভারত টিকা রফতানি বন্ধ করে দিলে হোঁচট খায় এই কর্মসূচি। প্রায় ১৪ লাখ মানুষ কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নির্ধারিত সময় অর্থাৎ দুই মাসের ব্যবধানে পায়নি। এরপর করোনা টিকার ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগ কোভেক্স-এর আওতায় জাপান অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বাংলাদেশে পাঠালে টিকাদান কর্মসূচি গতি পায়। কোভেক্সের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মডার্না ও ফাইজারের টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া চীনের সিনোফার্ম থেকে উপহার পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ বাণিজ্যিকভাবে টিকা আমদানি শুরু করে। সিনোফার্ম বাংলাদেশের বেসরকারি কোম্পানি ইনসেপ্টার সাথে যৌথ উৎপাদন চুক্তি করেছে। যৌথ উৎপাদনের টিকা ডিসেম্বর থেকে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। চীনের সিনোভ্যাক কোম্পানি থেকেও বাংলাদেশ ১০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাচ্ছে। চীন ছাড়াও রাশিয়া থেকে স্পুটনিক-ভি টিকা আমদানির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন টিকাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩০ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ এবং ১৫ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছে। মোট ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।