১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ব্রিটিশ এমপিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। এটি একটি সৌজন্য বৈঠক হলেও বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করায় খানিকটা বিব্রত হয় ব্রিটিশ এমপিরা। দলীয় দায়িত্বশীল একাধিক নেতার বরাতে এই তথ্যের সত্যতা জানা গেছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ‘কনজারভেটিভ ফ্রেন্ড অব বাংলাদেশ’- এই গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা পল স্কাউলিরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিএনপির এ নালিশ বিব্রতকর। দেশের অভ্যন্তরের কথা বাইরের মানুষের কাছে বলাটা নিতান্তই বেমানান। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে বিএনপি বুঝতে পারছে না, এতে করে তার নিজ দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা মূলত খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া রায়গুলোর দণ্ড কমিয়ে তুলনামূলক কম সাজার ও তারেক রহমানের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করার জন্য ব্রিটিশ এমপিদের অনুরোধ করেছিলাম। প্রকৃতপক্ষে তারেক রহমানের নির্দেশে ব্রিটিশ এমপিদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম আমরা। বিদেশে দীর্ঘদিন উদ্বাস্তু জীবনযাপনে বিরক্ত হয়ে এবং বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করতে অনেকটা অসহায় হয়েই তারেক রহমান ব্রিটিশ এমপিদের দ্বারস্থ হতে বিএনপি নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যদিও বৈঠকটির উদ্দেশ্য সফল হয়নি এবং বিএনপি নেতারা আশাহত হয়েছেন।
গুলশান পার্টি অফিসের সংস্কারপন্থী একটি সূত্র বলছে, ব্রিটিশ এমপিদের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রথমেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল দলের বর্তমান বেহাল দশা, বেগম জিয়ার মুক্তিতে দলীয় ব্যর্থতা, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরিতে ব্রিটিশ এমপিদের সহায়তা চান। অন্তত বেগম জিয়ার প্যারোলে মুক্তির ব্যবস্থা করতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য ব্রিটিশ এমপিদের অনুরোধ করেন তিনি। যেহেতু বেগম জিয়া প্রমাণিত দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত, তাই তার প্যারোলের ব্যাপারে সরকারের নেগোসিয়েশন করতে নিজেদের অপারগতা প্রকাশ করে ব্রিটিশ এমপিরা।
জানা গেছে, তারেক রহমানের ব্যাপারে কথা বলতেই চটে যান তারা। জঙ্গিবাদে মদদ দেয়া, সীমাহীন দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ এনে তারেক রহমানের ব্যাপারে কোনোরকম সহযোগিতা না করার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরলে হতাশা বিরাজ করে বিএনপি নেতাদের মনে। যদিও মির্জা ফখরুল, মওদুদ আহমেদ অনেক চেষ্টা করেও ব্রিটিশ এমপিদের সামনে তারেক রহমানকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন।