বিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের শেষ মেয়র বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা আর নেই।
নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় আজ বেলা ১টার সময় তিনি ইন্তেকাল করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোক প্রকাশ করেছেন বলেও জানান শায়রুল।
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালের ২৪ মে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান মহান মুক্তিযুদ্ধের এই গেরিলা যোদ্ধা।
দীর্ঘ ৫ বছর খোকা নিউইয়র্কে হাসপাতালে বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন ওষুধ সেবনের ফলে খোকার মুখে ঘা হয়ে যায়। তিনি খাবার খেতে পারছিলেন না বিধায় ১৮ অক্টোবর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তাররা তার শ্বাসনালিতে টিউমার দেখতে পান। ২৭ অক্টোবর তার শ্বাসনালির টিউমার অপসারণ করা হয়। এরপর থেকে তার অবস্থা অবনতির দিকে চলে যায়। পরে চিকিৎসকরা তাকে বাঁচানোর আশা ছেড়ে দেন।
সাদেক হোসেন খোকার জন্ম ১ অক্টোবর ১৯৫১ সালে। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে শেষ বর্ষের ছাত্র। মহান মুক্তিযুদ্ধে ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। আশির দশকে বামপন্থি রাজনীতি ছেড়ে আসেন বিএনপিতে।
ওই সময় নয়াবাজার নবাব ইউসুফ মার্কেটে বিএনপির কার্যালয় থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা করে সাতদলীয় জোটের নেতৃত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওই অন্দোলনে ঢাকা মহানগর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছিলেন খোকা।
তিনি ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন। এ সময় তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী হন। ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকার মেয়র ছিলেন।