বান্দরবান অফিসঃ-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও মানুষের জীবনমান উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব, অকল্পনীয়। কোনো দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির অন্যতম প্রধান ও পূর্বশর্ত হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির নিশ্চয়তা বিধান করা। সেই লক্ষ্যে গত এক দশক ধরে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার; যার প্রভাব পড়েছে জনজীবনে ও ব্যবসা বাণিজ্যে।
বর্তমানে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত গ্রামাঞ্চল থেকে শহরাঞ্চল। বিদ্যুতের আলোয় মানুষের জীবন, জীবিকা এবং ব্যবসায় এসেছে গতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাস্তবায়িত হচ্ছে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ প্রকল্প।
বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সাফল্য তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে জানাতে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ ২০১৮’। ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, নতুন যৌবনের দূত’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিতব্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০০৮ সালে সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল মাত্র ৪০৩৬ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের অভাবে দেশের সকল আবাসিক স্থাপনাসহ শিল্প কারখানাগুলো স্থবির ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার সময় তাদের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো এবং লোডশেডিং থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংগতি মাথায় রেখে চাহিদা অনুযায়ী যথাযথ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করাই ছিল মূল চ্যালেঞ্জ বর্তমান সরকারের জন্য৷
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল ২০০৯ সালের ৬ জুন। এরপর প্রতিবছরই দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হলো ১০ হাজার ১৩৭ মেগাওয়াট।
পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের সময়ে এর আগে ২০১৬ সালে ৩০ জুন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ৯ হাজার ৩৬ মেগাওয়াট। এর আগে ২০১৬ সালের ৯ জুন দেশে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৭৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট সর্বোচ্চ ৮ হাজার ১৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়েছিল।
বিগত নয় বছরে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নতুন ৮৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। আর এ সময়ে অবসরে গেছে মাত্র তিনটি কেন্দ্র। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৭টি আর এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি।
সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে- দেশের প্রতিটি ঘরে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজ শেষ করা হবে ২০২১ সাল নাগাদ। এজন্য বিদ্যুতের উৎপাদন যা-ই হোক না কেন, প্রতিমাসেই নতুন তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে প্রতিমাসে নতুন গ্রাহক যুক্ত হওয়ায় সংকট সৃষ্টি হলেও তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিদ্যুৎখাতের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।