রাজনৈতিকভাবে মৃতপ্রায় বিএনপিকে পুনরায় জীবিত করার লক্ষ্যে হঠাৎ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে সাথে নিয়ে দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। সূত্র বলছে, দলের বিপর্যয় কাটিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য তারেক রহমান বিএনপির কর্তৃত্ব ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ড. কামালের হাতে ন্যস্ত করেছেন। আর এর প্রেক্ষিতেই তারেক রহমান কর্তৃক বিএনপির দায়ভার বুঝে পাওয়ার পর ২২ ফেব্রুয়ারি ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানিতে সমাপনী বক্তব্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান ড. কামাল হোসেন।
এ বিষয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন চিকিৎসার জন্য গত ১৯ জানুয়ারি রাতে সিঙ্গাপুর যান। সেখান থেকে তিনি অতি গোপনীয়তা রক্ষা করে লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের সাথে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। দেশের রাজনীতিতে বিএনপির পূর্ণ কর্তৃত্ব পেলে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ড. কামাল মাঠে নামবেন বলে বৈঠকে শর্ত জুড়ে দেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের এক নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিকে সামনে রেখে ড. কামাল জাতীয়তাবাদী দলের পূর্ণ কর্তৃত্ব ও অভিভাবকত্ব দেয়ার শর্ত জুড়ে দেয়ার পরই তারেক রহমান নিজের সিদ্ধান্ত দলের সিনিয়র নেতাদের জানাতে লন্ডনে আসতে নির্দেশনা প্রদান করেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ধারাবাহিকভাবে সিনিয়র নেতারা লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে দেখা করে করণীয় সম্পর্কে অবহিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় মির্জা ফখরুল ২৮ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার কথা বলে সেখান থেকে লন্ডন গিয়ে তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে আসেন।
বিএনপি সূত্র বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবির জন্য মির্জা ফখরুলকে দায়ী করে সরে দাঁড়ানোর কথা বলেন তারেক রহমান। তিনি দলের পুনর্গঠন ও পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে সিনিয়র নেতাদের অবহিত করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপির কর্তৃত্ব ড. কামালের হাতে এখন থেকে ন্যস্ত থাকবে বলেও সিনিয়র নেতাদেরকে জানিয়ে দেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিএনপির অভিভাবকত্বের বিষয়টি তারেক রহমান দলের সিনিয়র নেতাদের অবহিত করার পর ২২ ফেব্রুয়ারি ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানির সমাপনী বক্তব্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। যদিও এর আগে নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে দেশের কয়েকটি বিভাগে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে ড. কামালকে খালেদা জিয়ার মুক্তি বিষয়ে বক্তব্য দিতে অনুরোধ করলেও তা তিনি বারবার কৌশলে এগিয়ে গেছেন। এবার বিএনপির কর্তৃত্বের শর্তে খালেদার মুক্তি চাইলেন ড. কামাল।