ব্রুকলি পুষ্টিকর সবজি হলেও মফস্বলে বেশ অপরিচিত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। তবে অপরিচিত হওয়ায়, বান্দরবানে ক্রেতারা সবজি হিসেবে এটি কিনতে বেশী আগ্রহী । তবে লাভজনক সাগু নদীর চরের কৃষক মো. আবুতাহের । তার ক্ষেতে প্রায় ২থেকে ৩ হাজার ব্রকলি উৎপাদিত হয়েছে। বাজারে চাহিদাও বেশি। এবং পার্শবতী হাট বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা।
গত ১৪ ই ফেব্রুয়ারী সাঙ্গু নদীর তীরে আমি দাঁড়িয়ে বিভিন্ন কৃষকের কথা কোপন জানতে পারলাম কৃষকরা কঠিন পরির্চমের ফলে ক্ষেতিতে পরির্চম দিচ্ছেন। মো. আবছার জানান, প্রথমবারের মতো চারা রোপণ করার পরে দ্বিতীয় বার আবার কলি থেকে গেছে উঠে। সাগু নদীর চরে ১ বিঘা জমিতে চাষ করে ভালো মুনাফা লাভ করেন। আসলে মুল্য একটু বেশি, প্রথমে কেজি প্রতি ৭০টাকা এবং পরে ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। উচ্চ মূল্যের ফসল (সবজি) ব্রকলি, নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে ব্রকলির বীজ রোপণ করেন কৃষক হারুন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী ৩ মাসেই ভালো ফলন এসেছে। তবে পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও অনেকে জানেন না। ব্রকলির উপকারী সবজি, অপরিচিত সবজি হওয়াতেই এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষক মো বাদশা মিয়া জানান, ব্রকলি চাষে ফলন ভালো এসেছে। এবারে লাভবান হবেন, কারন বাজারে চাহিদা বেশি। এতে এটি উৎপাদনের পাশাপাশি মফস্বলসহ গ্রামাঞ্চলে পরিচিতি বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তবে ব্রকলি চাষে কৃষি অফিসাররা মাঠে এসে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। এটি উৎপাদনে পরিমাণ অনুযায়ী সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলেই চলে।
ডাঃ জ্যোতি ময়,বক্তব্যে – ব্রকলির পুষ্টিগুণ প্রচুর। গবেষকরা ব্রকলিকে বলছেন আল্টিমেট ক্যান্সার ফুড। প্রতিদিন ব্রকলি খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধক কাজ করে। ভিটামিন ‘কে’, ভিটামিন ‘সি’, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ। ব্রকলি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ব্রকলিতে রয়েছে সালফোরাফেন। যা ক্যান্সার রুখতে সাহায্য করে। লো-ক্যালরির এই সবজি হার্ট ভালো রাখতেও সাহায্য করে। এটি দেখতে ফুলকপির মতো হলেও ফুলগুলো সাদার পরিবর্তে পাতার রংয়ের মতো গাঢ় সবুজ।
ব্রকলির চাষ অক্টোবর/ নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়। পরে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় মূল ক্ষেতে রোপণ করা হয়। ৭৫ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে এতে ফুল আসে। মেধা-বিকাশ, চোখের দৃষ্টি, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিসহ মানবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি বজায় রাখার পাশাপাশি ব্রকলি অর্থনৈতিক লাভজনক ফসল। এটি চাষ করার জন্য স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি অফিসার ডঃ সাফায়ত আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ব্রকলি এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে পরিচিত নয়। এর অনেক পুষ্টি ও ওষুধি গুণ রয়েছে। এগুলো জানতে পারলে ভোক্তাদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হবে। কৃষিতথ্য সার্ভিসের মাধ্যমে এই সব সবজির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালানো সম্ভব।
সাগু নদীর চরের কৃষক আবুতাহের পরিশ্রমে ব্রকলির ভালো ফলন পাওয়া গেছে। আশা করি কৃষক আবুতাহেরকে দেখে অন্যকৃষকরাও এ সবজি চাষে ঝুঁকবে। বান্দরবানের সকল সাংবাদিক ভাইরা তার ফসল বাজারজাত করতে সহযোগিতা করবেন ।