নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত নেতাদের প্রতি সদয় হওয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি। বহিষ্কৃতদের বিএনপিকে প্রতিহতের ঘোষণায় কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। জানা গেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বহিষ্কৃত নেতাদের প্রণোদনা দেয়ার লোভ দেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের পুনরায় দলে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করা হচ্ছে।
বহিষ্কৃত একাধিক নেতার মারফতে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে তৃণমূল গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বহিষ্কার করতে থাকে বিএনপি। বহিষ্কার প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায়ে বিষয়টি স্বাভাবিক থাকলেও পরবর্তীতে বহিষ্কারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৫ দিনের মাথায় বহিষ্কারের সংখ্যা দাঁড়ায় তিন শতাধিক। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বহিষ্কৃত নেতারা একত্রিত হয়ে তৃণমূলে বিএনপিকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। এতেই বিপাকে পড়ে দলটি। কয়েক দফায় বহিষ্কার করলেও সংখ্যা এত বেশি হবে তা ভাবতে পারেনি বিএনপি।
এমন প্রেক্ষাপটে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, বিষয়টি এরকম জটিল হয়ে দাঁড়াবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। যদিও তৃণমূল নেতারা প্রথম পর্যায়েই উপজেলা নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়াতে বারণ করেছিলো। কিন্তু সেটা উপেক্ষা করে দল, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করলে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। যা তৃণমূলে তীব্র ক্ষোভ সঞ্চার করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বহিষ্কৃতদের প্রণোদনা ও সময় সাপেক্ষে দলের ফিরিয়ে নেয়া হবে।
দল থেকে বহিষ্কৃত নেতাদের একজন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার হাট হাজারী উপজেলা বিএনপির সদস্য সৈয়দ মোস্তফা আলম মাসুম প্রণোদনা প্রলোভনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কেবল আমি নয় যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের প্রণোদনা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। দল বলছে, যেন আমরা বিএনপির বিরুদ্ধে না দাঁড়াই। কিন্তু বহিষ্কার করে আমাদের প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে এবং এতে যে আমাদের আত্মমর্যাদার ক্ষতি হয়েছে তা কি ফিরিয়ে দিতে পারবে দল?
এই বিষয়ে পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদস্য ও জিয়ানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফায়জুল কবির তালুকদার বলেন, দল থেকে আমাদের একটু শান্ত হতে বলা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপিকে কিছুই জানাইনি। আমরা বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে বহিষ্কৃতদের নিয়ে নতুন তৈরি হওয়া সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলে বিএনপিকে ভুগতে হবে বলে মনে করছেন রাজনীতি সচেতন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।