৪৩ বছর পর সবচেয়ে শক্তিশালী আঘাত বয়ে আনছে ফনি। অতিপ্রবল এ ঘূর্ণিঝড় আগামীকাল শুক্রবার বাংলাদেশে আঘাত হানবে বলে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ অতিক্রম করার সময় এটির গতি হবে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার।
ফনির আঘাত নিয়ে বাংলাদেশের চেয়েও বেশি চিন্তিত ভারত। বাংলাদেশে আঘাত হানার আগে ফনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উডিষ্যা রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়বে এমনটিই আভাস আবহাওয়া অধিদফতরের। ভারতে আগে আঘাত হানার কারণে কিছুটা দুর্বল অবস্থায় ফনি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার দিকে আঘাত হানবে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফনি বৃহস্পাতিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ধীরে এগিয়ে এলেও ফনি বেশ শক্তিশালী হয়ে গেছে। এখন তার গতি বেড়ে গেছে। এ কারণে বাংলাদেশের পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে ১৯৭৬ সালের পর ভারতীয় মহাসাগরীয় অঞ্চলে এতবড় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়নি ভারত।
দেশটির দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতরের মতে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ফনি শুক্রবার ভারতের উডিষ্যা রাজ্য উপকূলে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আছড়ে পড়ার সময় ঘণ্টায় প্রায় ২০৫ কিলোমিটার গতি থাকবে এই ঘূর্ণিঝড়ের।
গত চার দশকেরও (৪৩ বছর) বেশি সময়, অর্থাৎ ১৯৭৬ সালের পর ভারত মহাসাগরে এত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়নি দেশটি।
১৯৭৬ সালের পর এখন পর্যন্ত এপ্রিলে বঙ্গোপসাগরে যত ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তার কোনোটি কখনই এত শক্তিশালী আকার ধারণ করেনি।
ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে রেখেছে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর। উডিষ্যায় এরই মধ্যে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরই মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ, উডিষ্যা, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এক হাজার ৮৬ কোটি রুপি আগাম বরাদ্দ দিয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের ঘূর্ণিঝড়সংক্রান্ত তথ্যে দেখা গেছে, ১৯৬৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে ৪৬টি ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ হয়েছে।
প্রসঙ্গত বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ এক সপ্তাহ আগে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। নাম হয় ফনি। এই ঝড়ের আশঙ্কায় বাংলাদেশের নাগরিকরা উদ্বেগে সময় পার করছে। উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সারাদেশে নৌচলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।