কার্যালয়ে স্থায়ী হয়ে যাওয়ায় সমালোচকরা রিজভীকে বিএনপির ‘আবাসিক নেতা‘ বলে টিপ্পনী কাটেন! দলে গুঞ্জন উঠেছে, বিএনপির বিপর্যয়ের মধ্যেও স্বপদে বহাল থাকতে নিয়মিত কারিশমা দেখাচ্ছেন রিজভী আহমেদ। রিজভীর কর্মকাণ্ডে বিএনপি বিতর্কিত হচ্ছে বলেও নেতাকর্মীদের মাঝে গুঞ্জন চাউর হয়েছে।
এদিকে রিজভী আহমেদের দৈনন্দিন অভিযোগের প্রেস ব্রিফিংকে বিএনপির রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সার্টিফিকেট হিসেবে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, লিখিত বক্তব্যে ভাষার জাদু দেখিয়ে আইসিইউতে থাকা বিএনপিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন রিজভী আহমেদ।
রিজভী আহমেদের অতি বাক্যব্যয়কে রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আখ্যায়িত করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাস সিংহ রায় বলেন, কারণে-অকারণে যুক্তিহীন প্রেস ব্রিফিং করে গণমাধ্যম কর্মীসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের মন বিষিয়ে তুলছেন রিজভী আহমেদ। আমার কাছে তথ্য আছে, তার এই ব্রিফিংকে এখন দলের ভেতরে-বাইরের অনেকেই বাঁকা চোখে দেখছেন। অনেক সময় এ নিয়ে সৃষ্টি হয় হাস্যরসের। প্রতিদিন বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার চিত্র তুলে ধরে নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করায় দলটির হাইকমান্ডের হাতে প্রায়ই তিরস্কৃত হন রিজভী আহমেদ।
তিনি আরো বলেন, রিজভী শুধু ব্রিফ করেই দায় সারছেন। তার এই অতিমাত্রার ব্রিফিং এখন অনেকের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির প্রতি অশ্রদ্ধা ও অভক্তি সৃষ্টি করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন রিজভী। আমি অবাক হই, বিএনপিতে কি কেউ নেই যিনি রিজভীর মুখের লাগাম টেনে ধরবেন?
রিজভীর এই অতিমাত্রায় ব্রিফিংয়ের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, রিজভী কেন প্রতিদিন ব্রিফিং করেন, আমরাও জানি না। অনেকেই ফোন করে জানতে চান— এতে দলের কি লাভ হয়? জবাব দিতে পারি না। কতিপয় নেতা আছেন, যারা সংবাদ মাধ্যমে নিজের চেহারা আর নাম দেখাতে চান। রিজভী সম্ভবত সেই দলের সভাপতি। রিজভী আহমেদকে প্রতিনিয়ত অভিযোগ না করার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েও লাভ হয়নি। কিছু বললেই তিনি বলেন, লন্ডনের নির্দেশে সব হচ্ছে। প্রাত্যহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি যে দিনে দিনে ‘অভিযোগ পার্টি‘তে পরিণত হচ্ছে`, সেটি রিজভী আহমেদ বুঝতে পারছেন না। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি আরো বলেন, প্রেস ব্রিফিং এবং অহেতুক অভিযোগ করে শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থ ছাড়া কোনো লাভ হচ্ছে না। বিএনপির কার্যক্রম শুধু প্রেস ব্রিফিং কেন্দ্রিক হয়ে পড়ায় দিনকে দিন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও হতাশ হয়ে পড়ছেন। রিজভীর অহেতুক কর্মকাণ্ডে বিএনপির প্রতি আকর্ষণ হারাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। বিএনপিকে এমন হতাশার রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। একটা দল শুধু হতাশা ও অভিযোগকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারে না।