প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বাত্মক সহযোগিতায় মাথা জোড়া লাগা দুই বোন রাবেয়া ও রোকাইয়া দেশ-বিদেশে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাবা-মার সঙ্গে বাড়ি ফিরেছে। শিক্ষক দম্পতি বাবা রফিকুল ইসলাম ও মা তাসলিমা খাতুন তাদের আদরের দুই কন্যা নিয়ে সোমবার বিকালে বাড়ি পৌঁছানোর পর নিজেদের মধ্যে যেমন ছিল আনন্দের ঝিলিক, তেমনি এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন তারা।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা গ্রামে এমন চিত্র দেখা যায়। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা শেষে জোড়া মাথা আলাদা হয়ে সাড়ে তিন বছর পর নিজেদের বাড়ি ফিরল বহুল আলোচিত রাবেয়া-রোকাইয়া। বাড়িতে পৌঁছার পর তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয় স্বজন-প্রতিবেশীরা। রাবেয়া-রোকাইয়াকে ফিরে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত গোটা গ্রাম।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৬ জুন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেয় জোড়া মাথার জমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়া। জন্মের পর থেকে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তাদের বাবা-মা শিক্ষক দম্পতি রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন। এ পরিস্থিতিতে তাদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সেই খবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছালে তিনি দায়িত্ব নেন রাবেয়া-রোকাইয়ার চিকিৎসার।
২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তির পর ডা. সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে চলে চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার। এই অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নেন হাঙ্গেরির একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও। দীর্ঘ চিকিৎসায় ৪৮টি জটিল অস্ত্রোপচারের পর আলাদা করা সম্ভব হয় রাবেয়া-রোকাইয়াকে। এতে অংশ নেন প্রায় ১০০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
এদিকে রাবেয়া-রোকাইয়ার বাড়ি ফেরার খবরে তাদের বাড়িতে যান চাটমোহরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সৈকত ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, চাটমোহরের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি পরিবারের দুর্দশার কথা জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছিলেন। উপজেলা প্রশাসন পরিবারটির পাশে থাকবে।