দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ। চলতি বছর উদ্বোধনের কথা মাথায় রেখে এগিয়ে নেয়া হয়েছে নির্মাণ কাজ। আগে যেখানে মাসে একটা করে স্প্যান বসতো, সেখানে বসছে দুইটি করে। আর একে একে দৃশ্যমান হতে শুরু করে এই পদ্মা সেতু। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মাঝনদীর ১৩ এবং ১৪ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। আর এতে করেই সেতুর দেড় কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় স্প্যান ওঠানোর কাজ। কিন্তু ক্রেন থেকে ফেলা নোঙ্গর বার বার মাটি থেকে ছুটে আসায় পিলারের ওপর স্প্যান বসাতে বৈরী পরিস্থিতির মুখে পড়েন প্রকৌশলীরা। অবশেষে আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় স্প্যানটি পিলারের ওপর পুরোপুরি বসানো সম্ভব হয়। এছাড়াও আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে জাজিরা প্রান্তে বসবে সেতুর ১১তম স্প্যান।
সেতু বিশেষজ্ঞরা জানান, এই সেতু উদ্বোধনের ফলে দেশের এক প্রান্তের মানুষ বহু উপকৃত হবে। যা তারা আগে স্বপ্নেও ভেবে দেখেনি। বর্তমানে দেশের দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ যশোর ও তার আশেপাশের এলাকায় যেতে সময় লাগে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। দূরত্ব কম হলেও বিশাল পদ্মা নদীর কারণে ঘুরে যেতে হয় অনেকটা পথ। আর সেতু হয়ে গেলে ঢাকা থেকে যশোর যেতে সময় নেবে মাত্র ৪ ঘণ্টা। আর এতে করে ওই এলাকার স্থানীয়দের ঘুচে যাবে গ্লানি।
এদিকে সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং (এমবিইসি) সূত্র জানায়, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পদ্মা সেতু গড়তে তাদের সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ করতে হয়েছে পদ্মার তলদেশে।
তলদেশে মাটির গঠনগত বৈচিত্র্যের কারণে ১১টি পিয়ারের নকশায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে। শুরুর দিকে মাওয়া অংশে কাজ বাদ দিয়ে জাজিরা চলে যেতে হয়েছে তাদের। তারপর বছরখানেক পর ফের পিলার ডিজাইন হাতে পাওয়ার পর মাওয়া অংশে কাজ শুরু হয়। সেতু বিশেষজ্ঞরা জানান, ১০ টি স্প্যান বসানোর পাশাপাশি সেতুর ২৪৭টি পাইল বসানোর কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি ৪৭টি পাইলের মধ্যে ১৫টি পাইলেরও অর্ধেকাংশ বসানো হয়ে গেছে।
পদ্মা সেতুতে থকছে মোট ৪২টি পিলার বা খুঁটি। এর মধ্যে ২২টির নির্মাণ এখন পুরোপুরি শেষ। আগামী জুন মাসের মধ্যে বাকি আরও ১০টি পিলারের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন আরও দ্রুত গতিতে স্প্যান বসানো যাবে। প্রতি মাসে দুটি করে স্প্যান বসানো তখন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।