একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর পহেলা জানুয়ারি বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দিনব্যাপী মত বিনিময় করেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। বিএনপিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর বিষয়ে বিবিধ আলোচনার মধ্যে দলের নেতৃত্ব বদলের প্রসঙ্গও এসেছে। দলের তরুণ নেতাদের সঙ্গে একমত হয়ে তারেক রহমান নিজেও নেতৃত্ব পরিবর্তন এবং প্রবীণদের সরে যাওয়ার পক্ষে। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব পদেও পরিবর্তন আসতে পারে। বর্তমান মহাসচিব নিজেই এই দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চান। তিনি লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে এ কথা বলেছেন। এমনকি দলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা অবসরে যাচ্ছেন অথবা বিএনপি ছেড়ে দিচ্ছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অবস্থা করুণ। স্থায়ী কমিটির প্রায় অর্ধেক পদ খালি। দীর্ঘদিন বলা হলেও শূন্য পদ পূরণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাছাড়া যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন, তাদের একটি বড় অংশ বার্ধক্যজনিত নানা রোগশোকে আক্রান্ত। তারেক জিয়া নিজেও এই স্থায়ী কমিটির পরিবর্তনের পক্ষে। স্থায়ী কমিটিতে তারেক জিয়া পরিবারের লোকজন এবং তরুণদের আনতে চায়। তারেকের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে অধিকাংশই মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা একমত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তারেক একজন নতুন মহাসচিব খুঁজছেন। নতুন মহাসচিবের ব্যাপারে বর্তমান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নাম আসে সবার আগে। কিন্তু তারেক জিয়া তাকে মহাসচিব হবার যোগ্য মনে করেন না বলেই বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তারেক জিয়ার পছন্দ আব্দুল আউয়াল মিন্টুর পুত্র তাবিথ আউয়াল। কিন্তু দলের অধিকাংশ মাঠকর্মীরা তাকে ঠিকমত চেনেই না। একজন নতুন মহাসচিব না পাওয়া পর্যন্ত মির্জা ফখরুলকে এই পদে রাখা হচ্ছে।
এদিকে দলের বেশ ক’জন সিনিয়র নেতা অবসরে যাবার কথাও ভাবছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া এবং ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনও বলেছেন, রাজনীতির ওপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। তিনিও অবসরের কথা ভাবছেন। আর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদসহ আরও ক’জন খুব শীঘ্রই দল বদলাবেন এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বিএনপিতে। তবে, বিএনপির নেতৃত্বের পরিবর্তনের আগে যে দলটি কোন আন্দোলনে যাবে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত।