বেগম জিয়ার মুক্তি ও সরকার পতন আন্দোলনে বিএনপি নেতাকর্মীদের অনাগ্রহে ক্ষুব্ধ দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য শতবার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানালেও প্রতিবার ফলাফল শূন্য দাঁড়িয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলন বিমুখতা ও অনাগ্রহ বেগম জিয়ার মুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে এবং দলে হতাশা বাড়ছে বলে একইসঙ্গে ক্ষোভ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা।
বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে একান্ত আলাপকালে অভিযোগের বিষয়গুলো জানা গেছে। বিএনপির সামগ্রিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আন্দোলনের ডাক দিলেই হয় না, সেই আহ্বানকে বাস্তবায়িত করতে যে ক্রমাগত প্রয়াস দরকার, দলে সেটির চরম অভাব দেখা দিয়েছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সরকারবিরোধী আন্দোলন, বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে নানা কথা বললেও কাজে সেটির প্রমাণ নেই।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনের সাহস মুখে নয়, কাজে দেখাতে পারলেই সরকারের পতন ঘটবে। বিএনপি নেতারা মুখে খই ফোটালেও আন্দোলনে তাদের দেখা পাওয়া যায় না। বিএনপি নেতাকর্মীদের জেল-জুলুম ভীতির কারণে বেগম জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত হচ্ছে। রাজনীতিতে জেল-জরিমানা ভীতির কোনো অবস্থান নেই। ভয় পেলে রাজনীতি করার প্রয়োজন নেই। পদ দখল করে রাখারও প্রয়োজন দেখি না। সাহস করলেই সব সম্ভব হয়।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তি ও সরকার পতন আন্দোলন বক্তব্যেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেলো। গত কয়েক মাস ধরে শুধু পরিকল্পনা চলছে, সেই পরিকল্পনার আর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দলের সাংগঠনিক দুর্বলতায় নেতাকর্মীরা হতাশ। রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকায় দলের কর্মীরা বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি কমিটি নিয়ে যেসব দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, সেটিও নিয়ে নানা গুঞ্জন ও হতাশার জন্ম দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে নেতাকর্মীরা চিন্তিত হলেও সেটি বাস্তবায়ন করা নিয়ে নির্ধারিত কোনো পরিকল্পনা নেই। মুখের কথা ও অন্তরের কথা মিল নেই দলে। যার কারণে ভুগতে হচ্ছে বেগম জিয়া ও বিএনপিকে।