নিউজ ডেস্কঃ- খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিকে এড়িয়ে তারেক রহমানের বিশেষ নির্দেশে ড. কামালের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এরইমধ্যে দলীয় মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করেছে বিএনপি।
সূত্র বলছে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে যেতে রাজি নয় তৃণমূল বিএনপি। কেননা, খালেদা জিয়াকে দলের প্রাণ হিসেবে বিবেচনা করে তৃণমূল বিএনপি। খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করা মানে সরকারের সকল কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়ার শামিল। যে সরকার খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে সেই সরকারের অধীনে গৃহপালিত দল হিসেবে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করায় বিএনপি ও তারেক রহমানের উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়েছে তৃণমূল বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আন্দোলন ও জেল-জরিমানার ভয়ে প্রিয় নেত্রীকে জেলে রেখে তারেক রহমানের নিদের্শে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে মনের ক্ষোভ নিয়ে হাজার হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীরা দলত্যাগ করছেন। এছাড়া লন্ডনে অবস্থান করে বিএনপিকে খালেদাবিহীন বিএনপিতে পরিণত করার চক্রান্তে তারেক রহমানের উপর চরম অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তারা কোনভাবেই খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পক্ষে নন।
আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া বেগম জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না, বেগম জিয়া ছাড়া নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হবে এমন মন্তব্য করে নাটোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান সরকারকে বৈধতা দিয়েছে। এখন নির্বাচনের পর যদি ফলাফল নেতিবাচক হয় তবে বিএনপি অন্তত সরকারকে দোষারোপ করতে পারবে না। কারণ, বিএনপি জেনে-শুনেই খাল কেটে নিজ ঘরে কুমিরকে ঢুকিয়েছে। এই সরকার সাপের মুখে চুমু দেয় আবার ব্যাঙের মুখেও চুমু দেয়। আমরা শুনেছি, তারেক রহমান বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানোর স্বার্থেই খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ তারেক স্যারের উচিত ছিলো নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনের ডাক দেওয়া। বিএনপির এমন বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তে তৃণমূলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এরইমধ্যে নাটোর জেলার লাখ লাখ বিএনপি নেতা-কর্মী রাগ, ক্ষোভ নিয়ে গোপনে দলত্যাগ করছেন। খবর পেয়েছি, সারা দেশের হাজার হাজার বিএনপি কর্মীরা অভিমান নিয়ে দলত্যাগ করছেন। বিষয়টি বিএনপির জন্য ক্ষতিকারক।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন বলেন, এই সরকারের অধীনেই যদি নির্বাচন করতে হয় তাহলে বিএনপি ২০১৪ সালে কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, সেই প্রশ্নটি তৃণমূল কর্মীদের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়া খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পক্ষে নয় তৃণমূল বিএনপি। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অর্থ হলো বিএনপি দাবি আদায়ে ব্যর্থ। বিএনপি আন্দোলন, সংগ্রাম করতে ভয় পায়- সেটি প্রমাণ হলো নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে। নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে বৈধতা দিয়ে দিলো। বিষয়টি তৃণমূল বিএনপির জন্য কষ্টকর ও বেদনাদায়ক। আমি মনে করি, যে সরকার ম্যাডামকে জেলের রেখে কষ্ট দিচ্ছে, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন করলে ম্যাডামের অপরাধকে দলীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হবে। আমরা জেনেছি, তারেক রহমানের নির্দেশে মির্জা ফখরুলরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। আমি খবর পেয়েছি, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন বাদ দিয়ে সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে লাখ লাখ নেতা-কর্মী দলত্যাগ করছেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।