একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর বদলে নির্বাচন করছেন তার মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী। এরইমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছেন তিনি। তবে নির্বাচনী প্রচারণার ব্যয় নিয়ে নতুন কৌশল হাতে নিয়েছেন তিনি। জানা গেছে, কুঁড়ি সিদ্দিকীকে নিয়ে বাবা কাদের সিদ্দিকী ও মা নাসরিন সিদ্দিকী বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে শুরু করেছেন। সূত্র বলছে, নির্বাচনী খরচ মেটানোই এই তৎপরতার প্রধান উদ্দেশ্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল-৮ আসনের মনোনয়ন নিয়ে কাদের সিদ্দিকী দ্বারা উপেক্ষিত বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান। যিনি কাদের সিদ্দিকীর দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলনজনিত কারণে বাতিল হওয়া মনোনয়ন হস্তান্তরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রাথমিকভাবে তাকে আশ্বস্ত করলেও পরে তা মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকীর কাছে হস্তান্তর করেন।
ওই নেতা জানান, নির্বাচনী প্রচারণার আগ থেকেই তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে নির্বাচনের বিষয়ে শলাপরামর্শের উদ্দেশ্যে দেখা করছেন। তবে তিনি প্রধান টার্গেট করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের পূর্বাঞ্চল পরিচালক (ল্যান্ড) ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে।
এদিকে সৌজন্য সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে মেয়েকে নিয়ে দেখা করলেও কৌশলে কাদের সিদ্দিকী প্রত্যেকের কাছেই নির্বাচনী ব্যয়ের বিষয়টি উল্লেখ করছেন বলেও জানান মাহমুদুল। এমনকি ওই আসনে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গেলে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার প্রসঙ্গও তুলছেন।
বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসানের দেয়া তথ্যের সত্যতা জানতে ‘বাংলা নিউজ পোস্ট’ একটি স্বনামধন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে বিষয়টি জানার চেষ্টা করে। শুরুতে তিনি কাদের সিদ্দিকীর এমন তৎপরতার কথা অস্বীকার করলেও নানা প্রমাণাদি উপস্থাপন করার পরে কাদের সিদ্দিকী ও কুঁড়ি সিদ্দিকীর তৎপরতার কথা স্বীকার করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বলেন, সিদ্দিকী সাহেব আমার কাছে এসেছিলেন মূলত নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে সৌজন্যসাক্ষাৎ করতে। তবে এই সাক্ষাতে কিছুটা অসংলগ্ন আচরণও লক্ষ্য করেছি। বারবার তিনি পরোক্ষভাবে নির্বাচনী ব্যয়ের প্রসঙ্গ তুলছিলেন এবং নির্বাচনে জয় নিশ্চিত হলে ব্যবসায়ীদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার প্রসঙ্গও বারবার উল্লেখ করেছেন। আমি তাকে আশ্বস্তও করেছি।
এদিকে কাদের সিদ্দিকীর এমন কৌশলকে ব্যক্তিত্ব বিসর্জনের সুচতুর কৌশল বলেই মনে করছেন রাজনীতি সচেতন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।