বান্দরবান অফিসঃ-একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক নাশকতার পরিকল্পনা করছে বিএনপি-জামায়াত ও এদের সম্পৃক্ত দলগুলো। অক্টোবরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পর ব্যাপক নাশকতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করার ছক এবং বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে নিজেদের মধ্যে গোপনে পরিকল্পনা করছে।
নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হলে কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলন, শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার কর্মসূচীসহ অরাজনৈতিক সংগঠনগুলোর দাবি-দাওয়াকে সামনে এনে রাজপথ উত্তপ্ত ও অস্থিরতা তৈরি করার ছক কষা হচ্ছে। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দিন থেকেই বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট রাজপথে আন্দোলনে নেমে হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও, পদযাত্রাসহ নানা ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করে অস্থির ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে জনজীবন স্থবির করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আলোচনায় তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিদেশী প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর শরণাপন্ন হওয়ার জন্য লবিং ও কূটনৈতিক যোগাযোগ চালানো হচ্ছে। নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হলে রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে ব্যাপক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে।
জানা যায়, এরই প্রেক্ষিতে বিএনপি-জামায়াতের নগর ও জেলা নেতারা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার নেতাকর্মীদের নগরে এসে জড়ো হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। সাধারণ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ক্যাডারদের প্রতিও একই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে তারা আবাসিক এলাকা, হোটেল ও মেসে অবস্থান নিচ্ছে।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচার শুরুর প্রাথমিক পর্যায় ২০১১ সাল থেকে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি পোড়ানো, পেট্রোল বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন শুরু করেছিল জামায়াত-শিবির। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানো এবং ২০১৫ সালে লাগাতার অবরোধের সময়ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায় বিএনপি-জামায়াত।
পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হলেই বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট রাজপথের আন্দোলনে নামতে পারে। দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে আন্দোলনের জন্য সামনে ইস্যু করা হতে পারে এমন আভাস পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে কিংবা পরে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার রায় ঘোষিত হওয়ার পর আসামিদের মুক্তির দাবিও যুক্ত করা হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে না পারে সেজন্য বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট রাজপথে সহিংস আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে। কারণ জামায়াত ইতোমধ্যেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারিয়ে বেকায়দায় পড়ে বিএনপির ছাতার নিচে যুক্ত হয়ে সহিংস আন্দোলনে গিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের পতন ঘটানোর পক্ষে মতামত দিয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি গ্রেপ্তারকৃত জামায়াত নেতারা পুলিশকে জানিয়েছে, নির্বাচনকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলা ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য সহিংস আন্দোলন গড়ে তোলার প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন তাদের। এজন্য মহানগরীকে কয়েকটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। একেক জোনে একেক নেতাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এখন শুধু নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের অপেক্ষায় বিএনপি-জামায়াত।