নির্ধারিত সময়ের সাত মাস আগেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু এবং দ্বিতীয় গোমতী সেতু। কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করে নির্ধারিত সময়ের আগেই কোনো প্রকল্প সম্পন্ন করা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিরলই বটে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বারবার সময় আর ব্যয় বৃদ্ধিই যেনো স্বাভাবিক ছিলো বাংলাদেশে। সেখানে মূল চুক্তির এক মাস আগে এবং বরাদ্দ সময়ের সাত মাস আগে শেষ হলো কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণকাজ। একই সঙ্গে প্রায় হাজার কোটি সাশ্রয় হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু এবং দ্বিতীয় গোমতী সেতু উদ্বোধন করেছেন। এছাড়া এসময় প্রধানমন্ত্রী কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ফ্লাইওভার, কালিয়াকৈর, দেওহাটা, মির্জাপুর ও ঘারিন্দা আন্ডারপাস এবং কাড্ডা-১, সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে বিমাইল সেতুরও উদ্বোধন করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নকাজ অব্যাহত থাকবে। আমরা আমাদের সেতুগুলোর উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এটা চলমান থাকবে। প্রায় সারা বাংলাদেশে একটা যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি। সড়ক, নৌ, রেল ও বিমান মিলে সব দিক থেকে মানুষের যোগাযোগটা যাতে সহজ হয়ে যায় সেই চেষ্টা করছি। আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আরও এগিয়ে নেবো।’
এর আগে নবনির্মিত কাঁচপুর ব্রিজ ইতোমধ্যেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। নতুন দু‘টি সেতু চালু হওয়াতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিশেষ করে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা অনেকটাই স্বস্তি ও আরামদায়ক হবে। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতীর সঙ্গে দ্বিতীয় কাঁচপুর ব্রিজের কাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুনে কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। যদিও ২০১৬ সালের জুলাইতে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার কারণে নির্মাণকাজ চার মাস বন্ধ ছিল। এ কারণে সরকার নির্মাণকাজের সময় ছয় মাস বাড়িয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয়। এরপরও সেতু তিনটির নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের সাত মাস আগেই সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পে প্রস্তাবিত ব্যয়ের তুলনায় ১ হাজার কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। উক্ত সেতু দুটি চালু হওয়াতে দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন অনেক সহজতর ও সাশ্রয়ী হবে। যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যয় হবে না।
এদিকে আসন্ন ঈদ-উল ফিতরে মহাসড়কে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই যানবাহন চলাচল করতে পারবে এমন আশায় এ রুটে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালক, যাত্রী ও নানা শ্রেণিপেশার লোকজন বেশ খুশি, তাদের মাঝে বিরাজ করছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস।