আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনে অংশগ্রহন করা দলগুলোর মনোনয়ন সংগ্রহকারীর সংখ্যা ছিল রেকর্ড সংখ্যক। প্রতিটি আসনের বিপরীতে মনোনয়ন সংগ্রহকারীর সংখ্যা ছিল গড়ে ৫০ এরও অধিক। মনোনয়ন সংগ্রহ করার দিক থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চেয়ে তিনগুন বেশি পরিমাণ মনোনয়ন সংগ্রহকারী ছিল বিএনপিতে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার তাগিদে শুরু থেকেই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য শুদ্ধ নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। সেই সাথে তারা গ্রহণ করছে নানাবিদ যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তারই ফলসরূপ মনোনয়ন বাছাইয়েও নির্বাচন কমিশন কাজ করেছে সাহসিকতার সাথে। রেকর্ড পরিমান মনোনয়ন সংগ্রহকারীর বিপরীতে মনোনয়ন বাতিলের তালিকাও ছিল দীর্ঘ। খেলাপি ঋণ ও আদালতে সাজার বাইরে প্রার্থীর সই না থাকা, দলীয় প্রত্যয়নপত্র ছাড়া দলের নাম ব্যবহার করা, হলফনামায় তথ্য গোপন করা, সরকারি সেবার বিলখেলাপি হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে অনেকের মনোনয়ন বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন। তিন হজার ৬৫টি মনোনয়নের বিপরীতে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। ঋন খেলাপি, মহাসচিবের সাক্ষরে মিল না থাকা, ফৌজধারী মামলা, হলফনামায় ভুলসহ নানা কারণে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের সংখ্যা ছিল ছিল খানিকটা বেশি। মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থীরও। ২৯৫ আসনে বিএনপির ৬৯৬ জনের মনোনয়ন দাখিল রাজনৈতিক কৌশল বলে উল্লেখ করা হলেও মনোনয়ন বাছাইয়ে প্রার্থীদের অযোগ্যতার বিষয়ে অবগত ছিল দলের নেতৃবৃন্দ । পরবর্তীতে আপিলের মাধ্যমে বিএনপির উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশন। শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিষাদগার করলেও প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে নির্বাচন কমিশনকে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান বিএনপি মহাসচিন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।
বিএনপির প্রার্থীদের বৈধ ঘোষণার কারণে নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তারা যে অসংখ্য প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন, আজকে নির্বাচন কমিশনের শুনানির মধ্য দিয়ে তাঁদের অনেকেই প্রার্থী হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। আমি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই, তারা ন্যায়বিচার করেছে।’
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিতর্কিত এম এ আজিজ কমিশনের মতো যেকোনো বিতর্ক এড়াতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন । ২০০৫ সালে বিএনপি থেকে নিয়োগ পাওয়া এম এ আজিজ সে সেসময় বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে তৈরী করেছিল সোয়া এক কোটি ভোটার তালিকা এবং নিয়োগ দিয়েছিল তিনশোরও অধিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে যা সারাদেশে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয় এবং সারা দেশের মানুষ ক্ষোভে উত্তাল হয়ে রাস্তায় নামে ।