বান্দরবান অফিসঃ-সৃষ্টির আদিকাল থেকে নারী-পুরুষের সম্মিলিত উদ্যোগ, ত্যাগ ও অবদানের ভিত্তিতে পরিবার, সমাজ ব্যবস্থা ও সভ্যতা বিকাশ লাভ করে। এই পৃথিবীর যা কল্যাণকর তার সব কিছুর পিছনে রয়েছে নারীর অবদান। আমাদের পুরুষশাসিত এই সমাজে পুরুষের অবদানই দৃশ্যমান হয় কিন্তু একজন নারী সব সময় তাকে সাহস জুগিয়েছে, সাহায্য করেছে। সেই অবদানটুকু সব সময় ছিল ম্লান হয়ে। কিন্তু সব সময় সাক্ষী ছিল ইতিহাস। এজন্য বিদ্রোহী কবি বলেছেন, ‘কোন কালে একা হয়নি ক জয়ী পুরুষের তরবারি, প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে বিজয় লক্ষী নারী।’ এই পংক্তির মাধ্যমে সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে নারীর অবদান প্রকাশ পায়।
এককালে এ দেশের নারীরা ছিল শোষিত ও শাসিত। কৈশোর না পেরোতেই তাদের বাল্যবিবাহের শিকার হতে হতো। প্রতিনিয়ত নারী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হতো। সমাজের পদে পদে তাকে সহ্য করতে হতো নানা প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু বর্তমান সরকারের নারীবান্ধব বহুবিধ কর্মকাণ্ডে, বাংলাদেশের নারীরা আজ অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে বের হয়ে আসার পথ খুঁজে পেয়েছে। বাংলাদেশের মেয়েরা বর্তমানে পাচ্ছে সমান সুযোগ-সুবিধা। দূর হয়েছে দেশের লিঙ্গ বৈষম্যতা। ঘরে বাহিরে আজ নারী পাচ্ছে সম্মান, স্বাধীনতা।
দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নারীরা এগিয়েছে বহুদূর। প্রধানমন্ত্রীর অবদানে তৈরী হয়েছে নারীদের কাজের ক্ষেত্র। করেছেন নারী ক্ষমতায়নের অনেক সুযোগ সুবিধা। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ভিতর নারী ক্ষমতায়নের দিক থেকে বাংলাদেশ সব থেকে এগিয়ে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য তৈরী করা হয়েছে আলাদা কাজের ক্ষেত্র। এই দেশের মেয়েরা আজ কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। ঘরে বাইরে সমানভাবে তারা সামলে নিচ্ছে।
শুধু নারী ক্ষমতায়ন করেই ক্ষান্ত হননি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। কাজ করেছেন নারী শিক্ষাক্ষেত্রেও। মেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য চালু করা হয়েছে অবৈতনিক শিক্ষা। ডিগ্রি পর্যন্ত এই শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের নারীদের অংশগ্রহণ বিশ্বে অষ্টম। এই পরিসংখ্যানে ১২৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৪তম, যা ২০১৪ সালে ছিল ৬৮ তম।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, রাজনীতিতে নারীর অগ্রগতির সূচকে বাংলাদেশ ভারতসহ সকল প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে পিছিয়ে ফেলে অনেক সামনে এগিয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে, নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণে যুগান্তকারী কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১। নারী শিক্ষা ও নারী ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী অর্জন করেছেন নানা সম্মাননা। এই সম্মাননা সমগ্র জাতির। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ভূষিত করেছে তাকে বিশেষ সম্মাননায়। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নারী শিক্ষা, ক্ষমতায়ন ও রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের জন্য পেয়েছেন বিশেষ সম্মাননা।
চলতি সময়ে, নারীদের অর্থনৈতিক মুক্তি, ব্যক্তি স্বাধীনতাকে প্রসারিত করায় নারীরা আজ বহুমাত্রিক কর্মদক্ষতায় এগিয়ে। অন্যায়ের প্রতিবাদে তারা সোচ্চার। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নারীর প্রাধান্য পুরুষতান্ত্রিক সমাজে, পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাকে চরমভাবে আঘাত করছে। মুক্ত মনে নিজস্ব চিন্তাকে বাস্তবায়নে নারীর প্রত্যয়ী মনোভাব আজ সর্বত্র প্রতীয়মান।
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে তৈরী করা হয়েছে নানা নীতিমালা। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নারী ও শিশু পাচার রোধে “জাতীয় সমন্বয় কমিটি” এবং “এসিড মামলা মনিটরিং সেল” গঠন করা হয়েছে। দেশের ৮টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার এর মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের চিকিৎসা সহায়তা, ডিএনএ পরীক্ষা, পুলিশি সহায়তা, আইনি সহায়তা, সামাজিক কাউন্সিলিং, পুনর্বাসন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দ্রুত আসামিদের বিচারকার্য সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে দেশের নারীরা আজ অদম্য। সমাজের সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সমাজের সকল ক্ষেত্রে তাদের সফল বিচরণ। এর পিছনে রয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান।
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.