নাক দিয়ে টেনে নেওয়া যায় এমন একটি কোভিড টিকার বাংলাদেশে ক্লিনিক্ল্যাল ট্রায়ালের জন্য আবেদন করা হচ্ছে।এই টিকা নিতে কোনো ধরনের সূঁচ ব্যবহার করতে হবে না।নাক দিয়ে টিকা টেনে নিতে হবে,যেতে হবে না টিকাদান কেন্দ্রে।এসব টিকা সংরক্ষণের ঝামেলাও তেমন নেই।এই টিকাটি উদ্ভাবন করেছে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইউনিভার্সিটি।সুইডেনের ইম্যিউন সিস্টেম রেগুলেশন হোল্ডিং এবি বা আইএসআর মানবদেশে এটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিআরও) হিসেবে বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে।এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল-বিএমআরসিতে আবেদন করা হবে।আর বাংলাদেশে এই টিকা তৈরির জন্য একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও চুক্তি করেছে সুইডিশ কোম্পানিটি।শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছেন মুগদা জেনারেল হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর।তিনি বলেন, “করোনা ভাইরাসের নানা ধরনের টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।নাক দিয়ে গ্রহণ করা যায় এমন টিকা আবিষ্কার হলে টিকার ধারণাই হয়তো পরিবর্তন হয়ে যাবে।এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফল হলে টিকার ক্ষেত্রে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে।“পাউডার জাতীয় এই টিকা পরিবহন, সংরক্ষণেও তেমন ঝামেলা হবে না।এসব টিকার জন্য কোল্ড চেইন মেনটেইন করতে হবে না,ফ্রিজে রাখতে হবে না।টিকাদান কেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না,সুঁই লাগবে না।এটা পুরোপুরি গ্রিন টেকনোলজি।” আহমেদুল কবীর বলেন,সুইডেনের একটি প্রতিষ্ঠান টিকাটি আবিষ্কার করেছে।এখন পর্যন্ত প্রাণিদেহে টিকার প্রয়োগ খুব ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে।“এটা যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। কিন্তু প্রাণীদেহে প্রয়োগে খুবই ভালো ফল এসেছে।মানবদেহে কি রকম কার্যকর হয় তা দেখতে হলে হিউম্যান ট্রায়াল করতে হবে।এটা দেখার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি।এখন বাংলাদেশের ইথিক্যাল কমিটি যদি আমাদের অ্যাপ্রুভাল দেয় যে,এখানে ট্রায়াল করা যাবে তাহলে বলা যাবে এটা মানুষের ওপর আসলে কতটা কার্যকর।” তিনি জানান,এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর হিসেবে কাজ করবেন তারা।এতে অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহও রয়েছেন।
প্রটোকল তৈরির কাজ করছেন তারা।
“(ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য) প্রটোকল আমরা তৈরি করেছি।আগামী সপ্তাহে এটা বিএমআরসিতে সাবমিট করব। তারা অনুমোদন দিলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বাংলাদেশে হবে।” আহমেদুল কবীর জানিয়েছেন,এই টিকাটি ১৮০ জনের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করার পরিকল্পনা হচ্ছে।এরা সবাই স্বাস্থ্যকর্মী।মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই পরীক্ষা হতে পারে।বাংলাদেশে এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হলে কি লাভ এমন প্রশ্নে আহমেদুল কবীর বলেন,তখন বাংলাদেশ এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় থাকবে।“আমরা সেটা উৎপাদনের অনুমতি পাব। ফলে এটা আমাদের জন্য একটি বিরাট সুযোগ হবে।” গত ৬ জুলাই এই টিকা উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশি কোম্পানি ইউনিমেডের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে আইএসআর।করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে গত ৭ ফেব্রুয়ারি।বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক,সিনোফার্ম এবং মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে।