নিউজ ডেস্কঃ-গত ৮ নভেম্বরের ঘটনা। আদালতে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন, নাইকো দুর্নীতি মামলা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে না চললেও তার বিরুদ্ধে চলবে কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছে করতে পারে আপনার, আমার সবার। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
এই মামলার অভিযোগটা হল,ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। অভিযোগ আর মামলা প্রথমে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া উভয়ের বিরুদ্ধেই ছিল। কিন্তু পরে শেখ হাসিনার বিপক্ষে করা মামলাটা খারিজ হয়ে গেছে। তবে খালেদা জিয়ার বিপক্ষে মামলাটা এখনো চলছে। শেখ হাসিনার মামলাটা খারিজ করা হয়েছে কারণ, শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬-২০০১ সালে নাইকোর সাথে দর কষাকষি করেছে, শেষ পর্যন্ত চুক্তি করেনি কারণ নাইকোর একটি শর্ত বাংলাদেশের স্বার্থের বিপক্ষে ছিল।দেশবিরোধী শর্ত মেনে না নেয়ায় তখন নাইকোর সাথে কোন চুক্তিই সই হয়নি।
ঠিক বিপরীত কাজটা করেছিল খালেদা জিয়ার সরকার। মামলায় বলা আছে, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেই খালেদা জিয়ার সরকার নাইকোর সাথে তাদের সকল শর্ত মেনে চুক্তি সই করে ফেলে। ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর নাইকো-বাপেক্স জেভিএ সই হয়। পরে কানাডার আদালতে প্রমানিত হয় যে, নাইকো বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার আমলে ঘুষ দিয়ে কাজ পায়। আরো জানা যায়, হাওয়া ভবনের গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ঘুষ নেন এবং খালেদা জিয়ার তৎকালীন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনকে ১ লাখ ৯০ হাজার কানাডিয়ান ডলার দামের একটি গাড়ি ও বিদেশ সফরের জন্য পাঁচ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নাইকোর বিরুদ্ধে। এছাড়া, দুর্নীতির মাধ্যমে নাইকোর সঙ্গে বাপেক্সের চুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়ায় জড়িত হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ সহ ২৬ জনের নাম আন্তর্জাতিক আদালতে (ইকসিড) উপস্থাপন করা হয়েছে। কাজেই নাইকো সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা উৎস কোথায়, এটি খোঁজ নিতে গেলে খালেদা জিয়ার ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলাটি খোঁজ করুন। যেখানে শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে নাইকোর সাথে কোন চুক্তিই করেননি তাহলে কেন তার বিরুদ্ধে মামলা চলবে? কাজেই তার বিরুদ্ধে নাইকো সংক্রান্ত ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মামলার অভিযোগ আসতে পারে না। মূলত এই কারণেই শেখ হাসিনার মামলা খারিজ করা হয়েছে। আর খালেদা জিয়া দেশবিরোধী চুক্তি করেছিল দুর্নীতির মাধ্যমে, কাজেই খালেদা জিয়া এবার শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক ভাবেও ফেঁসে যাবেন।