বিশ্ব অতিমারি করোনার প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।সে প্রভাব এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি অনেক দেশ।ইতিমধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ব পড়েছে নতুন করে অর্থনৈতিক সংকটে।এরকম বাস্তবতায় বাংলাদেশে যাতে ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে সেজন্য সরকার আগেভাগে প্রস্তুতি নিচ্ছে।ইতিমধ্যে সর্বক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচনসহ সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করেছে সরকার।জনগণকেও সাশ্রয়ী হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরামর্শ দিয়েছেন।কেন্দ্র থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত সরকারি ব্যয় সংকোচনের নীতির আলোকে বুধবার (১৩ জুলাই) উপজেলা প্রশাসনের ব্যয় নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
বিভিন্ন খাতে উপজেলা প্রশাসনের নামে যেসব বরাদ্দ দেওয়া হয় তার অতিরিক্ত ব্যয় করার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।এই নীতি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে।ব্যয় সংকোচন নীতির আলোকে মোট ১০ দফা নির্দেশনা জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন উপখাতের বাজেট বরাদ্দ বণ্টন এবং সঠিকভাবে বাজেট ব্যবহারের লক্ষ্যে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
দেশের সব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং দেশের সব জেলা,উপজেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার বরাবর পাঠানো হয়েছে ঐ সরকারি আদেশ।জানা গেছে,শুধু ইউএনও অফিস নয় অন্যান্য যে ১৭টি অফিস উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে তাদেরকেও তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।নির্দেশনায় যা বলা হয়েছে,অতিরিক্ত ব্যয়ের ক্ষেত্রে ব্যয়-উত্তর অনুমোদন দেওয়া হবে না।তাই অর্থের অতিরিক্ত ব্যয় করা যাবে না।প্রদত্ত বরাদ্দপত্রের বিষয়ে জিজ্ঞাসা থাকলে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অবশ্যই মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।বরাদ্দ করা অর্থ সরকারের প্রচলিত আর্থিক ও প্রশাসনিক নিয়মাবলি প্রতিপালন সাপেক্ষে কৃচ্ছ্রসাধনের মাধ্যমে ব্যয় করতে হবে।
অর্থবছর শেষে ১৫ জুলাই তারিখের মধ্যে ব্যয়ের বিবরণীসহ সমর্পণ প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। বিদ্যুৎ বিল নিয়মিত পরিশোধ করতে হবে।বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সময় এই অধিশাখার চিঠি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।কোনো কারণে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হলে,তার কারণ ব্যাখ্যা করে অতিরিক্ত বরাদ্দের চাহিদাপত্র পাঠাতে হবে।বরাদ্দ করা বাজেটের ভিত্তিতে অর্থবছরের শুরুতেই বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং সে পরিকল্পনা অনুসরণ করে ব্যয় করতে হবে।অর্থবছরের শেষ পর্যায়ে তড়িঘড়ি করে অর্থ ব্যয় করার প্রবণতা পরিহার করতে হবে।বেতন-ভাতাদি খাতে বাজেটের বরাদ্দ সীমার মধ্যে আছে কি না পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হলে যথাসময়ে অতিরিক্ত বরাদ্দের চাহিদাপত্র পাঠাতে হবে।জেলাপ্রশাসকের অধীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অর্গানোগ্রামের সেটআপ অনুযায়ী কর্মরত সংরক্ষিত বিষয়ের কর্মচারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের বাজেট বরাদ্দ থেকে বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি গ্রহণ করবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সার্বক্ষণিক শারীরিক ও বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত একজন পিসি/এপিসি ও ৯ জনসহ ১০ জন সশস্ত্র আনসার সদস্য ব্যতীত অতিরিক্ত কোনো আনসার সদস্যদের বেতন ও ভাতা এ মন্ত্রণালয়ের বাজেট থেকে পরিশোধ না করার জন্য দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।তবে বেতন ও ভাতাদি পরিশোধের সময় চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ থেকে বিগত (২০২১-২২) অর্থবছরের কোনো বকেয়া পরিশোধ করা যাবে না।চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে উপজেলায় নিয়োজিত এক জন পিসি/এপিসি ও ৯ জন আনসার সদস্যদের বেতন ও ভাতাদি নিরাপত্তা সেবা (ভাড়ার ভিত্তিতে) খাত থেকে পরিশোধের জন্য সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অনুরোধ করা হয়েছে।