২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে বিএনপি পেট্রোল বোমাবাজির ধ্বংসাত্মক প্রয়োগ করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে আবারও দলটি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমানের এক ভিডিও বার্তায় এমনটাই আভাস পাওয়া গেছ।
প্রায় পনেরো মিনিটের একটি ভিডিও বার্তায়, মাহমুদুর রহমান বলেন, ভিডিও ক্লিপে মাহমুদুর রহমান দাবি করেন ৩০ শে ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সবসময় ভিন্ন মতাদর্শ অনুসরণকারীর প্রতি অসহিষ্ণু।
তিনি বলেন, ৩০ শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পিছনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে ভারত। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারকে স্বৈরাচারী বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে অপসারণ করা সম্ভব নয় ।
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, মাহমুদুর রহমান পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র পেইড এজেন্ট হিসেবে এদেশে কাজ করছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় আইএসআই স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের উপর ক্ষিপ্ত। মাহমুদুর রহমান তার বক্তব্যে দাবি করেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জন্মসূচনালগ্ন থেকেই একটি ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল।
একমাত্র গণ-আন্দোলন বা গণ-বিদ্রোহের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত যেকোনো উপায়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা।
ভিডিও বার্তায় মাহমুদুর রহমান আওয়ামী লীগকে ‘জন্মগতভাবে স্বৈরাচারী সংগঠন’ এবং জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে তিনি ‘গণতন্ত্রের হত্যাকারী স্বৈরাচার’ বলে আখ্যায়িত করেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের সভাপতি কামাল হোসেন সম্পর্কে মাহমুদুর রহমান বলেন, বিএনপি নেতারা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে একমত হয়েছেন এটা লজ্জার ব্যাপার। মাহমুদুর রহমান বাংলাদেশের সকল সংবাদমাধ্যমকে সরকারের ‘পা-চাটা গোলাম’ বলে আখ্যা করেন।
আল-কায়েদা টাইপের ভিডিও বার্তাটিতে মাহমুদুর রহমান বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে গণতন্ত্র উদ্ধার করার জন্য আরেকটি যুদ্ধে নামার জন্য আহ্বান জানান।
বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মাহমুদুর রহমানের এই ভিডিও বার্তা থেকে এটা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচনে ভোটারদের দ্বারা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামির প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও পাকিস্তানি আইএসআই নিষ্ক্রিয় বসে নেই। এই কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা এখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র করছে। মাহমুদুর রহমান এই বার্তাটিতে পাকিস্তানের ল্যাপডগের ভূমিকা পালন করেছেন।
মাহমুদুর রহমানের ভিডিও বার্তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী স্পষ্টভাবে একটি গুরুতর অপরাধ। তাছাড়া, এটি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশে এখন পাকিস্তানি গুপ্তচররা নতুন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করার চক্রান্তের মামলায় তিনি একজন অভিযুক্ত আসামী। বর্তমানে তিনি বিদেশে বসবাস করছেন এবং তিনি বেশ কয়েকবার পাকিস্তানে আইএসআইয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বিদেশে বসে মাহমুদুর রহমান উলফার রাজাপিন পারেশ বারুয়াহ এবং জম্মু ও কাশ্মিরে কয়েকটি শীর্ষ জঙ্গিদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তিনি ভারতের তথাকথিত খালিস্তান আন্দোলনের কিছু ঊর্ধ্বতন নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছেন।