দুর্নীতি রোধে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সহযোগিতা চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের নবম অধিবেশন শেষে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, দুদকের অন্যতম একটি কাজ হলো সচেতনতা বৃদ্ধি। দুর্নীতি যেন না হয়। দুর্নীতি থেকে যেন মানুষ দূরে থাকে এটাও কিন্তু দুদকের অন্যতম কাজ। এজন্য আমরা ডিসিদের অনুরোধ জানিয়েছি। তারা আমাদের সবসময় সাহায্য করেন, আরও যেন সাহায্য করেন সে অনুরোধ জানিয়েছি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, একজন জেলা প্রশাসক জানেন তার অফিসে কোথায় কোথায় দুর্নীতির সুযোগ আছে। কোন অফিসে কোথায় কোথায় দুর্নীতির সুযোগ আছে, এটা কিন্তু জেলা প্রশাসকরা জানেন। ওই জায়গায় তারা যেন সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আরেকটি কাজ হলো গণশুনানি। আপনারা জানেন যে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির ধরনও পরিবর্তন হয়ে যায়। কোথাও যদি গণশুনানি করা হয় তাহলে দুর্নীতির নতুন ধরনগুলো জানা যায়। করোনার কারণে এটি এখন সীমিত আছে। আমরা ডিসিদের বলেছি তারাও যেন গণশুননি করেন। আমরাও করবো। কোথায় নতুন রূপে দুর্নীতি হয় এবং কিভাবে তা বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে তারা যেন সহযোগিতা করেন।
ডিসিরা কাজ করতে গিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন কিনা- জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের একটি সমস্যা হলো তদন্ত বা অনুসন্ধানে একটু সময় লেগে যায়। এটার কারণে হয়তো অনেক অভিযোগ থাকলেও সমস্যা হয়। এটা আমাদের একটি সীমাবদ্ধতা। এটা আমরা অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেন তদন্ত শেষ হয় আমরা সেই চেষ্টা করছি।
মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, দুর্নীতি এমন একটি জিনিস, প্রমাণ পাওয়াটা খুব কঠিন। অকাট্য প্রমাণ ছাড়া তো আমরা এগোতে পারি না। কারণ এটি না হলে আদালত মামলা গ্রহণ করবে না। যিনি ঘুষ নেন ও যিনি দেন, তারা কেউই তো স্বীকার করেন না। এটি কমিয়ে আনতে আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের যারা অনুসন্ধান করেন তাদেরকেও আমরা জবাবদিহির আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
দুদকের আইনজীবীরা মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকেন না, তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বেরও অভিযোগ রয়েছে- এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, জেলার যারা বিজ্ঞ আইনজীবী আছেন তাদেরকেই আমরা নিয়োগ করার চেষ্টা করি। দুদক আইনে আছে, আমাদের একটি প্যানেল থাকে। সহকারী সচিব বা সহকারী পরিচালকের বেতনে তো কোনো আইনজীবী আসতে রাজি হবেন না। তারা যদি স্বাধীনভাবে আইন পেশায় থাকেন, তাহলে তাদের আয় অনেক বেশি থাকে। আমার এখানে যদি নিয়ে আসি- পঞ্চম গ্রেডের বেতন যদি দেই, সেই টাকায় ভালো আইনজীবী আসবেন না। আইনজীবী হিসেবে যারা প্রতিষ্ঠিত তাদেকেই আমরা নিয়োগের চেষ্টা করি। তবে মামলার সময় উপস্থিত থাকেন না- এমন ঘটনা অনেক কম।