বান্দরবান অফিসঃ-বাংলাদেশের দুই আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। রাজনীতিতে বিভিন্ন কারণেই বহুদিন ধরে আলোচনার খোরাক জোগানে প্রবীণ দুই ব্যক্তির দ্বৈরথটাও বেশ পুরোনো। সারাজীবনই বিপরীত মেরুতে অবস্থান দুজনার। একে অপরকে কখনোই সহ্য করতে পারতো না। কিন্তু একাদশতম জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা মিলিত হয়েছেন একই বিন্দুতে। দুই মেরুর দুজনাকে এক বিন্দুতে এনেছে ক্ষমতার মোহ। সারাজীবনের শত্রুও মুহূর্তে হয়ে যায় বন্ধু। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে নিজের আক্ষেপের কথা প্রতিবেদককে বিশ্লেষণ করে বললেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।
ইউসুফ হোসেন বলেন, দল থেকে অন্যদলে, সেখান থেকে আবার পুরোনো দলে এভাবে অনেক ডিগবাজি শেষে বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গিয়ে গণফোরাম গঠন করা ড. কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরেই ভোটের রাজনীতিতে মূল্যহীন। ড. কামাল হোসেনের একান্ত চেষ্টায় গঠিত হয়েছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। ক্ষমতার জন্য সেই ঐক্যের ডাকেই এক টেবিলে পাশাপাশি ড. কামাল ও ব্যারিস্টার মওদুদ। ভাবতেই অবাক লাগে। কিভাবে ক্ষমতার লোভে শত্রু বন্ধু হয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার বলেন, ড. কামাল ও মওদুদ আহমেদকে আমি খুব কাছ থেকে চিনি। খুব বেশিদিন আগের কথা নয় যখন, আদালতে ড. কামাল ও মওদুদকে একে অপরকে গালাগাল করতে দেখতাম। এরশাদের পতনের পর ড. কামালকে আদালতে প্রকাশ্যে গালাগাল করেছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। এমনকি ব্যারিস্টার মওদুদ নিজের লেখা বই ‘কারাগারে কেমন ছিলাম ২০০৭-২০০৮’ এ ড. কামালকে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে অসৎও বলেছেন। উক্ত বইয়ের ৮৫ পৃষ্ঠায় মওদুদ আহমেদ ড. কামালকে সরাসরি অসৎ বলে উল্লেখ করেছিলেন। আর এখন ক্ষমতার টানে তারা বন্ধু।
এছাড়া, ড. কামালকে দুই মুখের মানুষ বলে আখ্যায়িত করে ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ২০০৭ সালের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ড. কামাল সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলছিলেন, জরুরি অবস্থা অনির্দিষ্টকাল যাবৎ বহাল রাখা যেতে পারে। কিন্তু যখন স্বার্থ শেষ হয়ে যায় তখন তিনি বলেছেন, অবিলম্বে এই জরুরি আইন প্রত্যাহার করা উচিত। এক মুখে দুই কথা এতো বড় আইনজীবী কিভাবে বলতে পারে তা আমার মাথায় আসেনি।