বান্দরবান অফিসঃ-রাজনীতির জন্য যেকোন নতুন জোটের আবির্ভাব ইতিবাচক। এতে গণতন্ত্র মজবুত হয। সরকারের জবাবদিহিতা বাড়ে। নির্বাচনে প্রতিযোগিতা থাকে। তবে এর পূর্বশর্ত হিসেবে স্বপ্রণোদনার উপস্থিতি আছে কিনা সেটা খেয়াল করা জরুরী। এই সব তাড়না ভেতর থেকে আসতে হয়। তৃতীয় কোন পক্ষ এর সাথে জড়িত থাকলে তাকে ষড়যন্ত্র বলা অস্বাভাবিক কিছু না।
রাজনীতির বিভিন্ন সংবাদ যারা গোচর করেন, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের খবর তাদের কাছে পুরোনো। তবে খবরের ভেতরেও বেশ কিছু খবর থাকে। এসব খবর মনে খটকা জাগায়। চিন্তার উদ্রেগ করে। ভাবায়।
গত ২৫ তারিখ সংবাদপত্রে এ সংক্রান্ত খবরাখবর পড়তে গিয়ে একটা লাইনে চোখ আটকে থাকলো। যেখানে বলা হচ্ছিল যুক্তফ্রন্ট এবং ঐক্য প্রক্রিয়ার শীর্ষ স্থানীয় নেতারা এই জোটের নাম নিয়ে বেশ দ্বিধায় ভুগছেন। নাম নিয়ে এমন দ্বিধা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে যে ঘটনা আমাকে বেশ অবাক করেছে তা হল বিএনপির পক্ষ থেকে নামের প্রস্তাব পাঠানো। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে- আচ্ছা্, নামের মত এদের জন্মও কী অন্য কারো প্রভাবে? আমার মত অনেকেই এমন সন্দেহ করবে বলে আমার ধারণা। চোখ রেখে দেখলাম বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের হয়ে বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বেশ উৎসাহী। নজরুল ইসলাম খানতো পরিস্কার বলেই দিয়েছেন যে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য আসলে সরকার বিরোধী ঐক্য। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের পক্ষ থেকে উনার বক্তব্যের এখন পর্যন্ত কোন প্রতিবাদ না আসায় এই জোটের সাথে বিএনপির আত্মিক সম্পর্কের ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হতেই পারি।
পরিচিতি আর জনপ্রিয়তা এক বস্তু নহে- এই উপলব্ধির উদাহরণ ড. কামাল হোসেন। পেশা জীবনে তিনি একজন সফল আইনজীবি। সারা পৃথিবীতেই আইনজীবিদের রাজনীতি করতে দেখা যায়। ড. কামালও হয়ত তেমনটা চেয়েছিলেন।
তবে দেশ এবং দেশের বাইরে তার পরিচিতি থাকলেও তিনি জনপ্রিয় নন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতে যাওয়ার নাম করে পাকিস্তান চলে যান। সেখানে আইন ব্যবসা শুরু করেন। স্বাধীনতা-পূর্ব নির্বাচনে জয়লাভ করলেও স্বাধীন বাংলাদেশে বিজয়মালা অধরাই থেকে গেছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে রাজনীতির হাতেখড়ি নিয়ে ড. কামাল রাজনীতির মাঠে পা রেখেছিলেন। কিন্তু বারবারই জনপ্রিয়তার পরীক্ষায় শুকনো মাঠে হোঁচট খেয়েছেন।
জনপ্রিয় কিন্তু অকার্যকর- এই উপলব্ধির উদাহরণ হিসেবে প্রফেসর এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেবকে স্বরণ করা যেতে পারে। ইনি পেশা জীবনে একজন সফল ডাক্তার। অন্যদিকে, রাজনীতির ময়দানে নি:সঙ্গ ফেরারী। মাত্র একটি আসন নির্ভর একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থন আছে তার। ২০০২ সাল থেকে তিনি জাতীয়তাবাদী দলে ব্রাত্য হয়ে আছেন। সম্প্রতি ড.কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য নামে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সাথে আছেন জে এস ডি সভাপতি আ স ম রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও সুলতান মনসুর আহমেদ। এখন যারা আছেন তাদের প্রায় সবাই কোন না কোন দলের থেকে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় বের হয়েছেন। প্রাথমিক অবস্থায় একে দলছুটের দল বলে যে কারো মনে হতে পারে।
২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মাইনাস টু, তৃতীয় শক্তি, আমেরিকা, ভারত, বহি:শক্তি- বেশ কিছু শব্দ আমাদের কানে আসতো। আমরা ড.ইউনূসের কথাও বেশ শুনতে পেতাম। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসলে আস্তে আস্তে এসব শব্দ আমরা ভুলে যেতে শুরু করি। জানা যায়, আমেরিকার প্রবল ইচ্ছায় ড.ইউনূস অথবা ড.ইউনূসের প্রবল ইচ্ছায় আমেরিকা; বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে সরিয়ে তৃতীয় কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চেয়েছিলো। দেশের বহুল প্রচারিত একটি দৈনিক পত্রিকাও এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলো। শেখ হাসিনার প্রচুর জনপ্রিয়তার সামনে এই অপচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়ে। বেশ কিছুদিন যাবৎ সেই সব শব্দের কিছু কিছু কানে আসতে শুরু করেছে।
পাঠকদের প্রতি প্রশ্ন- জাতির সব আদর্শের প্রতিনিধি ছাড়া এবং সব রাজনৈতিক দল ছাড়া কোন ঐক্য হলে তাকে কী জাতীয় ঐক্য বলা যায়?
Publisher - Lutfur Rahman (Uzzal)
Published By The Editor From chttimes (Pvt.) Limited (Reg.No:-chttimes-83/2016)
Main Road,Gurosthan Mosque Market, Infront of district food Storage, Bandarban hill district,Bandarban.
Phone - News - 01673718271 Ad - 01876045846
Copyright © 2024 Chttimes.com. All rights reserved.