নিউজ ডেস্কঃ-খালি চোখে তাদের দেখলে হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ। কিন্তু আসলে এরা ‘বিশেষ মিশন নিয়ে নামা ক্যাডার বাহিনী’। তারা প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী গ্রুপ। এদের প্রধান মিশন হলো ঢাকায় বড় ধরণের কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানো। এদের একটি বড় অংশ মালয়েশিয়া থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত।
কিন্তু না, এরা জেএমবি বা আনসারউল্লার মতো কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না। এরা সরাসরি ছাত্রদল বা ছাত্র শিবিরও করে না।
এদের মধ্যে যে কয়েকজন ধরা পড়েছে, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয়ও পাওয়া যায়নি। এদের লক্ষ্য একটাই, বাংলাদেশে একটা অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। যাতে বর্তমান সরকার ক্ষমতা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। এদের একটা নামও আছে। এরা ‘ভাইয়া বাহিনী’ হিসেবে পরিচিত।
এই বাহিনী পরিচালিত হয় লন্ডন থেকে। এটি সরাসরি পরিচালনা করেন পলাতক, দণ্ডিত আসামী তারেক জিয়া। আর এই বাহিনীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। আর অনুগত ক্যাডারদের কাছে ‘ভাইয়া’ নামে পরিচিত তারেক। সেই নামানুসারে এই বাহিনীর নাম ‘ভাইয়া বাহিনী’। এই বাহিনী সমূলে উৎপাটন কঠিন। কারণ, বাহিনীতে ১০০ জন সদস্য করে মাত্র একটা গ্রুপ। আর এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে চেনে না। আর সবগুলো গ্রুপই চালায় লন্ডন থেকে তারেক জিয়া।
সম্প্রতি নয়াপল্টনে অগ্নিসন্ত্রাসেও মূল ভূমিকা ছিল এদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনে হামলায়ও এই ভাইয়া বাহিনীর উপস্থিতির সন্ধান পান গোয়েন্দারা। তারপর এদের নিয়ে তদন্ত করছে তারা। কিন্তু এই সন্ত্রাসী বাহিনীর উৎস সন্ধানে হিমশিম খাচ্ছে গোয়েন্দারা। কারণ, এরা স্ব-উদ্যোগে কোনো ঘটনা ঘটায় না। বরং, কোনো ঘটনার মধ্যে এরা ঢুকে পড়ে এবং সেখানে নিয়ন্ত্রণ নেয়।
যেমন উপাচার্যের বাসভবনের ঘটনা। এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম হয়েছে, কিন্তু ঘটনা ঘটিয়েছে তারেকের ক্যাডারেরা। এমনকি এরা যদি ধরাও পড়ে, তবুও এদের কোনো সাংগঠনিক পরিচয় পাওয়া যাবে না।
গোয়েন্দা অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপির দু-একজন নেতা ছাড়া এদের কেউ চেনে না। তারা এই সন্ত্রাসী গ্রুপ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। বিএনপি শীর্ষস্থানীয় দু-একজন নেতা জানেন যে, ঢাকায় তারেক জিয়ার নিজস্ব বাহিনী আছে। সামনের দিনগুলোতে এরা ভয়ংকর সব কাণ্ড ঘটাবে। গোয়েন্দারা এই বাহিনীর সদস্যদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
২০০৪-২০০৫ সালে ভারতে দাউদ ইব্রাহিম ‘ডি কোম্পানী’ নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ করেছিল। যাদের কাজ ছিল দাউদের পক্ষ থেকে বড় বড় ব্যবসায়ী, সিনেমার তারকা, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের থেকে অর্থ আদায়, ব্লাকমেইল ইত্যাদি।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, দাউদের আদলেই তারেক জিয়ার ‘ভাইয়া বাহিনী’। তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় এদের উপস্থিতি টের পেয়েছে গোয়েন্দারা। তারা মনে করছেন, এখন কষ্ট হলেও তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব।