সরকারকে সরাতে আমাদের পথ মাত্র একটি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুলের মতে, বেগম জিয়াকে মুক্ত করে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে বেগম জিয়াকে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মির্জা ফখরুলের বক্তব্যকে কেবল রাজনৈতিক প্রহসন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বিএনপি নেতারা ভালোমতোই জানেন যে তাদের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় কঠোর আন্দোলন তো দূরের কথা রাজপথে নামাটাই চ্যালেঞ্জ। সেই অর্থে কঠোর আন্দোলনের হুমকির বিষয়টি মূলত রাজনৈতিক প্রতারণা মাত্র। বিএনপির রাজনীতি কেবল আশায় ভর করে চলছে। যার কারণে দলটি দিবা স্বপ্নচারীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে বলেও মনে করছেন তারা।
মির্জা ফখরুলের তর্জন-গর্জনের কঠোর সমালোচনা করে তাকে ব্যর্থ রাজনৈতিক দলের মহাসচিব হিসেবে অখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) পলিটব্যুরোর একজন সদস্য। পরিচয় গোপন করার শর্তে তিনি বলেন, বিএনপির যে আশা করে তা কোনদিনই পূরণ হবে না। রাজনৈতিক দল নিশ্চয় সাহিত্য সমাজ নয়। এখানে কথা দিয়ে কাজ হয় না, প্রয়োজন সাংগঠনিক ও রাজপথের শক্তি। স্বপ্ন দেখা ভালো, তবে যে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার নয়, সেটি নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।
তিনি আরো বলেন, বেগম জিয়া এক বছরের বেশি সময় ধরে কারান্তরীণ। অথচ বিএনপি বিগত এক বছর শুধু অভিযোগ, অনুযোগ, গ্রুপিং-লবিং করে সময় নষ্ট করেছে। সত্যিকার অর্থেই যদি বিএনপি বেগম জিয়ার মুক্তি চাইতো তবে রাজপথে কঠোর আন্দোলন জমিয়ে রাখতো। যে দলের নেতারা জেল-জরিমানা ভয় পান তারা শুধু স্বপ্নই দেখবেন। তাদের দ্বারা কোনদিন আন্দোলন সংগঠিত করা সম্ভব নয়। শুনতে খারাপ লাগলেও এটি সত্য যে, বিএনপি আজকে বৃদ্ধ-স্বপ্নচারী ও সাহিত্যিকদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হলে গল্প-আলাপ বাদ দিয়ে তার ভাগ্যবরণ করার সাহস দেখিয়ে মাঠে নামতে হবে নেতাকর্মীদের। কারাবরণের ভয় পেলে রাজনীতি ছেড়ে দেয়া উচিত বিএনপি নেতাদের।
এমন অভিযোগের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের আন্দোলন আপাতত নাগরিক আন্দোলনেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। আমরা এমন স্থবিরতা থেকে বের হতে চাই। বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হলে তার মতই ভাগ্যবরণ করার সাহস থাকতে হবে- এ কথার সঙ্গে আমিও একমত। শুধু মুখে মুখে সংগ্রাম করলে চলবে না।